এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বমদ্রুধির-বক্ত্রঞ্চ দেব্যাঃ সিংহং প্রদর্শয়েৎ।
কন্যা বলে রাজা, ভার্য্যা হইব তোমার। এক নিবেদন আছে নিয়ম আমার।। আপন ইচ্ছায় আমি করিব যে কাজ। আমারে নিষেধ না করিবে মহারাজ।। কদাচিৎ কভু যদি বল কুবচন। আমার সহিত আর না হবে দর্শন।। ত্যাগ করি তোমারে যাইব নিজস্থান। স্বীকার করিল রাজা তাঁর বিদ্যমান।। যে কিছু তোমার ইচ্ছা কর নিজ সুখে। কখনো নিষেধ না করিব তোমাকে।। রাজার বচনে গঙ্গা স্বীকার করিল। গঙ্গারে লইয়া রাজা হস্তিনা আসিল।। দিব্য রত্ন ভূষণ বসন অলঙ্কারে। নানামত দ্রব্যা তুষিল সদা গঙ্গারে।। অনুগত হইয়া থাকেন নরপতি। চিরকাল ক্রীড়া করে গঙ্গার সংহতি।। মুনিশাপে বসুগণ জন্ম নিল আসি। জন্মিল গঙ্গার পুত্র যেন পূর্ণশশী।। পুত্র দেখি শান্তনুর আনন্দিত মন। নানা দান নানা যজ্ঞ করিছে রাজন।। হেথা পুত্র ল'য়ে গঙ্গা গেল গঙ্গাজলে। জলেতে ডুবিয়া মর পুত্র প্রতি বলে।। দেখিয়া শান্তনু হইল বিরস-বদন। ভয়েতে গঙ্গারে কিছু না বলে বচন।। তবে কতদিনে আর এক পুত্র হৈল। সেইমত করি গঙ্গা জলে ডুবাইল।। পূর্ব্বসত্যভয়ে রাজা কিছি নাহি বলে। নিরন্তর দহে তনু পুত্র-শোকানলে।। এক দুই তিন চারি পাঁচ ছয় সাত। একে একে গঙ্গাদেবী করিল নিপাত।। পুত্র শোকে শান্তনুর দহে কলেবর। কতদিনে জন্ম হৈল অষ্টম কুমার।। সুত ল'য়ে গঙ্গাদেবী যায় নিজ জলে। ব্যগ্র হয়ে নরপতি গঙ্গাপ্রতি বলে।। কোন্ মায়াবিনী তুমি এলে কোথা হতে। তব সম নিন্দিতা না দেখি পৃথিবীতে।। পাষাণ শরীর তব বড়ই নির্দ্দয়। এত বলি কোলে নিল আপন তনয়।। গঙ্গা বলে সূত-বাঞ্ছা কৈলে নরপতি। পূর্ব্বের নিয়ম পূর্ণ হৈল মহামতি।। তোমায় আমায় আর নাহি দরশন। এ সুত পালিও রাজা করিয়া যতন।। আমি পরিচয় তবে দিব নরপতি। আমি ত জাহ্নবী তিনলোকে মম গতি।। আমার উদরে যত হৈল সুতগণ। বশিষ্ঠের শাপে এই বসু অষ্টজন।। মুনিশাপে বসুগণ হইয়া কাতর। আমারে মিনতি করি মাগিলেক বর।। গর্ভেতে ধরিব বলি করি অঙ্গীকার। সে কাওণে হইলাম বনিতা তোমার।। রাজা বলে কহ শুনি পূর্ব্ববিবরণ। বসুগণে বশিষ্ঠ শাপিল কি কারণ।। গঙ্গা বলে সেইকথা শুন নরপতি। বরুণের পুত্র সে বশিষ্ঠ মহামতি।। হিমালয় পর্ব্বতে মুনির তপোবন। নানা ফল-ফুলে সদা শোভে তরুগণ।। দক্ষকন্যা সিরভী সে কাশ্যপ-গৃহিনী। কামদুঘা ধেনু হৈল তাহার নন্দিনী।। সেই ধেনু প্রাপ্ত হৈল বরুণ নন্দন। বৎস সহ সদা থাকে মুনির সদন।। দৈবযোগে একদিন বসু অষ্টজন। ক্রীড়া করি ভ্রমা সদা মুনির কনন।। দিব্যবসু-ভার্য্যা কামদুঘা ধেনু দেখি। একদৃষ্টে চাহে কন্যা অনিমেষ আঁখি।। সুন্দর দেখিয়া গাভী কহিল স্বামীরে। কাহার সুন্দর গাভী দেখ বনে চরে।। দিব্যবসু বলে এই বশিষ্ঠের গাভী। কশ্যপের অংশে জন্ম জননী সুরভী।। ইহার যতেক গুণ কহনে না যায়। এক প্ল দুগ্ধ যদি নরলোকে পায়।।