পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नि ब्लं or বুধীর বড় লোভ হইল-সে দেখিল একটা ছোট নাদায় দু'টি বাছুর জাব খাইতেছে। এই তাহার সুযোগ-সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছে-উঠানটাতে লোক নাই-অন্ধকারও বেশ ঘন। বুধী চট করিয়া বাছুরের পাশে আসিয়া নাদাটাতে মুখ ডুবাইয়া খাইতে আরম্ভ করিল। আঃ কতকাল পরে খোল-মাখা জাবের আস্বাদ আবার সে পাইল !*** ছোট বাছুরটা বিস্মিত ও ভীত হইয়া ডাকিল-মা-আ-আী । কে এসে খাচ্ছে দেখ কিছু দূরের ন্যাদাটা হইতে মুখ তুলিয়া তাহার মা বুধীকে দেখিতে পাইয়া বলিল-কে রে? দূর হ-দূর হ-আপদ কথা শেষ করিয়াই বাছুরের মা শিং নাড়া দিয়া বুধীকে গুতাইতে আসিল। বুধী তখন মাত্র কয়েক গ্ৰাস খাইয়াছে-ভয়ে সে খাওয়া ফেলিয়া দৌড় দিল। একটা বড় গরু বলিয়া উঠিল-আস্পৰ্দ্ধা দ্যাখে না ভিসিবীটার !• • • বুধী বড় অপমান বোধ করিল। জগতটা যে এত খারাপ তাহা সে আগে জানিত না। এতটুকু সহানুভূতি সে স্বজাতীয়ের কাছে আশা করিতে পারে না ? আবার ভিসিবী বলিয়া অপমান করা ? গ্রামের বাহিরে আসিয়া সে হাড়ে হাড়ে বুঝিতেছে জগৎ কি নিষ্ঠুর! তখন অন্ধকার খুব ঘন হইয়াছে। কৃষ্ণপক্ষের রাত্রি, গাছপালার মধ্যে জোনাকী জ্বলিতেছে। মশায় খাইয়া ফেলিয়া দেয় বলিয়া বুধী এই সব গাছতলায় শুইতে পারে না যেখানে সেখানে। সারাদিনের পরিশ্রমে শরীর তাহার ভাঙ্গিয়া পড়িতে চাহিতেছে। বরাবর তাহার সাজালের ধোঁয়ায় শোয়ার অভ্যাস। এই সময়ে প্রতিদিন মনে পড়ে তাহার আবাল্য পরিচিত নিজস্ব গোহাল ঘরটির কথা । তাহার ক্ষুদ্র জগতের কেন্দ্র সেখানে। সেই তাহার গৃহ। আজ তারই অভাবে সে গৃহহীন,