পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s क्विब प्रज ছন্নছাড়া হাইদ্রা পথে পথে বেড়াইতেছে। আর কখনো কি সেখানে ক্লান্ত শরীরকে এলাইয়া দিবার সৌভাগ্য তাহার ঘটবে ? গ্রামের বাহিরে ফাঁকা মাঠে তবুও মশা অনেক কম। এইখানেই একটু ভাল জায়গা দেখিয়া বুখী শুইয়া পড়িল। খানিক রাত্রে তাহার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। মাঠের মধ্যে ফেউ ডাকিতেছে। বাঘ বাহির হইলেই ফেউ ডাকে, বুধীর জানা আছে। ভযে তাহার শরীর অবশ হইয়া গেলি-সৰ্ব্বনাশ! যদি বাঘ আসিয়া পড়ে ? যদি তাহাকে দেখিতে পায় ? সারারাত দূরে দূরে ফেউ ডাকিল। বুধীর ঘুম হইল। না । একবার ভাবিল গায়ের মধ্যে কোন গোহালে গিয়া আশ্ৰয় লওয়া যাকৃ। পরীক্ষণেই ভাবিল, পরের টিটুকারী সে সহ করিতে পরিবে: না-বিশেষতঃ স্বজাতীয়দের ঠাট্টা বিদ্রুপ অসহ--তার চেয়ে বাঘের পেটে যাওয়াও ভালো । - শেষ জীবনে এত দুৰ্দশাও তাহার কপালে ছিল! কেহ ভালবাসে না, কেহ এক আঁটি বিচালি দিয়া আদর করে না, আপনার জন বলিতে কেহ নাই-যাহারা ছিল, তাহারা যে কোথায়, কতদূরে, কোনদিকেকে তাহাকে পথ নির্দেশ করিবে ? পথে পথে যে কতদিন কাটিল বুধীর তাহা হিসাব নাই। কত মাঠ, কত গ্রাম, কত বিল বঁওড়ের ধারের বাবলা বন, কত কচুরীপানায় ভক্তি মজাগাঙ। কচুরীপানার পাতা খাইলে মুখ চুলকায় সবাই জানে, বুধী। কখনো এর আগে খায় নাই-কিন্তু সব জায়গার ঘাস ভাল নয়-বিশেষত বন্যায় ডোবা পচা ঘাস খাইলে গলা ফুলিয়া মারা পড়িতে হয়, একথা বুধী জানে। বাধ্য হইয়া সুতরাং কচুরীপানার পাতাই এবার খাইতে হইল। এক জায়গায় পথের ধারে একটা কামারের দোকান। চাষালোক লাঙ্গলের ফাল জোড়াইতে আসিয়াছে। বুধীকে দেখিয়া একজন লোক বলিল-গরুডো কাদের হ্যা ?