পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

কির গল কষ্টের মধ্যেও সুখে থাকি। কিন্তু অলি কোথা হইতে ? খাওয়াই কি? | হাটতলায় কি ভীষণ অন্ধকার। মাত্র দুখানি দোকান, তাও দোকানীরা বন্ধ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। চারিদিকে বড় বড় গাছপালার অন্ধকারে জোনাকী জলিতেছে, বিলাতী আগাছটায় বাদুড়ে ডানা ঝটপটু করিতেছে। গভীর রাত্রি হইয়াছে, কিন্তু গরমে ঘুম আসে না চোখে। কি বিশ্রী গুমােট ! সারারাত্রি ঢুৰ চাব, শ েপাকা আম পড়িতেছে চারিদিকের আমবাগানে, শুইয়া শুইয়া শুনতেছি। উঃ, কি একঘেয়েই হইয়া উঠিয়াছে এখানকার জীবন, সকালে উঠি। নদীর ধারে একটু বেড়াইয়া আসিয়া সেই হাটতলায় ফিরিয়া আসি, বেশীদুর কোথাও বেড়াইতে যাইতে পারিনা, কি জানি রােগী আসিয়া যদি ফিরিয়া যায় ? সারাদিন ডিসপেন্সারি অাগলাইয়া বসিয়া থাকিতে হয় আশায় আশায়। মুদি পােড়। আঁখি বসি রসালের তলে ভ্রান্তিমদে মাতি ভাবি পাই। পাদপদ্ম। কাপে হিয়া দুরু দুরু করি-- আর তা ছাড়া যাই বা কোথায়? চাষা শা, কোন ভলােকের বাড়ী নাই যে বসিয়া একটু গল্প-গুজব করি। ঘুরিয়া ফিরিয়া সেই আমার ফুটা খড়ের ঘরের ডিপেহ্মারী আর মুজিবরের দোকান, দোকান আর ডিসপেন্সারী। কোন কোন দিন সন্ধ্যার দিকে পিপলিপাড়ার বিলের ধারে বেড়াইতে গিয়া দেখি বাগীরা কি করিয়া ভােঙ্গায় উঠিয়া ফেঁাচ ছুড়িয়া কই মাছ মারিতেছে। অন্ধকার দেখিয়া দুটা হয় তো শাক তুলিয়াও আনি কোন কোন দিল। একঘেয়ে আম-ভাতে ভাত অখণ্ড প্রতাপে রাজ্য চালাইতেছে তাে বৈশাখ মাস হইতেই -কতদিন আর ভাল লাগে ?