পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

দরজার বাহিরে পা দিয়াছি, শাশুড়ী ঠাকরুণ ওৎ পাতিয়া ছিলেন, বলিলেন—তুমি বাপু অমনি নিউদ্দিশ হয়ে থেক না গিয়ে। আমার এই অবস্থা, সংসারে একপাল কুপুষ্যি, কোথা থেকে কি করি বল তো? এক ঝাড়ি দুধের দেন। গোয়ালার কাছে, ছেড়া কাপড় পরে পরে দিন কাটায়, মা হয়ে চোখের সামনে দেখতে পারিনে বলে এক জোড়া কাপড় কিনে এনে দিয়েছিলাম, তার দাম এখনও বাকী--তোমার তো বাপু এখান থেকে চলে গেলে আর চুলের টিকি দেখা যায় না--কি যে আমি করি, এমন পুরুষ মানুষ বাপের জন্মে—ইত্যাদি ইত্যাদি। | সেই অবস্থায় আসিয়া আজ দেড় বৎসর শ্বশুরবাড়ী মুখো হই নাই। খব এর মধ্যে মাঝে মাঝে হাতে যখন যা আসিয়াছে, সুবাসিমীর নামে পাঠাই। দিয়াছি—কিন্তু স্বৰ শুদ্ধ ধরিলে, খরচের তুলনায় তার পরিমাণ খুব বেশী তো নয়। কিন্তু আমি কি করিব, চুরি-ডাকাতি তো করিতে পারি না। | সত্যই সুবাসিমকে বিবাহ করিয়া পর্যন্ত বেশী দিন তাহার সঙ্গে একত্র থাকিবার সুযােগ আমার হয় নাই। প্রথম প্রথম তাৰিতাম, একটা কিছু সুবিধা হইলেই তাহাকে লইয়া গিয়া কাছে রাখিব। কিন্তু বিবাহ করিয়াছি অঞ্জ ছয় সাত বছর, তার মধ্যে এ সুযোগ কখনও হইল না। শ্বশুর বাড়ীতেই বা গিয়া কয়দিন থাকা যায়, একে তো মেয়ে এতকাল ধরিয়া রহিয়াছে, তার উপর জামাই গিয়া দিনের বেশী দশদিন থাকিলেই শাশুড়ী ঠাকরুণ স্পষ্ট বিরক্ত হইয়া উঠেন বেশ বুবিতে পারি, কাজেই বুদ্ধিমানের মত আগেই সরিষা পড়ি। নিজের মান নিজের কাছে। একদিন শুনিলাম পানখোলার পাঠশালায় একজন মাষ্টারের পােষ্ট খালি আছে। মুজিবর রহমানের দোকানে সকালে বিকালে বসিয়া