পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* কিন্নর দল গেল। মায়ামমতার পাশ ছিন্ন করে। হয়ে পৰ্যন্ত মেয়েটা রোগে রোগে ভূগেছে। সর্বাঙ্গে তার ঘা-বড় বড় দাগ দাগ। পুজের গন্ধে কাছে যাওয়া যায় না। কিন্তু কমলা সমস্ত ঘূণা তুচ্ছ করে শোভার সেবা করেছে দু’হাতে। তার ফলে নিজের গায়েও স্থানে স্থানে ঘা হয়েছেসে সব গ্রাহ করেনি একটুও। সারা-হৃদয় নিয়োজিত ক’রেছে তার প্ৰাণীসদৃশ শোভাকে আরোগ্য করবার প্রচেষ্টায়। বড় বড় ডাক্তার কবিরাজ দেখান হোল -- রোজা এসে কোড়া কাটলো - অসংখ্য দেবতার কাছে মানত করা হোল। চেষ্টার কোন ত্রুটি রইলো না ; কিন্তু সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ প্ৰতিপন্ন করে রাত দশটায় শোভা মহানিদ্ৰায় আক্রান্ত হোল। মা বুকের ওপর লুটিয়ে পড়ে শতবার নাড়াচাড়া করে তাকে সজাগ করবার চেষ্টা করলে-বিনিয়ে বিনিয়ে তার প্রস্থানের জন্যে অনুশোচনা ক’রলে সারারাত্ৰি প্ৰায় । সে ঘটনার মাসখানিক পর কমলা নাকি শানিকে দেখে একদিন কেঁদে ফেলে-বুকের একটা গভীর দীর্ঘ নিঃশ্বাস চাপিতে পারেনি। তার নিঃশ্বাসের শব্দে আমার স্ত্রীর চিত্ত বিচলিত হয়। আস্তে আস্তে খুকিকে নিয়ে সরে আসে পাশের ঘরে। আমি তখন অফিসের হিসেবপত্র মিলাচ্ছি। বিজু আমার পাশে এসে বসলো। আমি চশমাটা আস্তে আস্তে চোখ থেকে খুলে বলি, “ কিছু বলুবে নাকি ?” “না এমন কিছু নয়।” আমি হাসি, বলি, “তা’ ঐ এমন সামান্য কিছুই শুনি না কেন।” “সত্যি, তোমার আবার এ সবে বিশ্বাস হয় না ।” “আঃ কৌতুহলই তো বাড়িয়ে দিচ্ছ কেবল।” “তুমি এ বাড়ী বদলাও।” “কারণ ?” “কমলা রোজ রোজ শানির পানে তাকিয়ে ফোস ফোস করে