দুষ্পাঠ্য নার কর্ণভূষণ মলিন হইয়া গেল আর দুই চক্ষুর দুষ্পাঠ্য হইয়া উঠিল॥ ৮২॥
পুরোহিত বধূকে কহিলেন, বৎসে! এই অগ্নি তোমার বিবাহ কার্য্যের সাক্ষী হইয়ারহিলেন। তুমি এখন অসঙ্কুচিত চিত্তে তোমার স্বামী শিবের সহিত একত্র হইয়া ধর্ম্মানুষ্ঠান করিবে॥ ৮৩॥
যেমন পৃথিবী গ্রীষ্মকালের প্রখর তাপ সহ করিয়া বর্ষার সর্ব্ব প্রথম জল পান করিতে থাকেন, তদ্রূপ পার্ব্বতী লোচনপ্রান্ত পর্য্যন্ত কর্ণযুগল বিস্তার পূর্বক পুরোহিতের পূর্বোক্ত কথাগুলি শ্রবণ করিলেন॥ ৮৪॥
তাহার মৃত্যুজয়ী সৌম্যমূর্ত্তি স্বামী যখন তাঁহাকে ধ্রুবতারা দেখিবার জন্য অনুমতি করিলেন, তখন তাঁহার কণ্ঠস্বর অবশ হইয়া গেল। তিনি মুখ তুলিয়া তারা দেখিবার পর ‘দেখিয়াছি’ এই কথাটী অতি কষ্টে মুখ হইতে নির্গত করিতে পারিলেন॥ ৮৫॥
এই রূপে বিধান শাস্ত্রে স্থপণ্ডিত পুরোহিত তাহাদিগের বিবাহ সংক্রান্ত সকল কার্য্যের অনুষ্ঠান করিয়া দিলে প্রজাবর্গের জনক জননী স্বরূপ তাঁহারা উভয়ে পদ্মাসনে উপবিষ্ট ব্রহ্মাকে গিয়া প্রণাম করিলেন॥ ৮৬॥
ব্রহ্মা বধূকে এই বলিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন ‘হে কল্যাণি! বীর সন্তান প্রসব কর’। কিন্তু তিনি বাক্যের অধীশ্বর হইয়াও শিবকে কি আশীর্ব্বাদ করিবেন ইহা ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলেন না, মৌনী হইয়া রহিলেন॥ ৮৭॥