পাতা:কুমার সম্ভব (কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য্য).pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তৃতীয় সর্গ।
৩৭

 তাঁহার জটাজূট সর্প দ্বারা ঊর্দ্ধভাবে বন্ধন করা হইয়াছিল, রুদ্রাক্ষ বীজময়ী জপমালা দুই ফের করিয়া কর্ণে রাখা হইয়াছিল, আর কৃষ্ণশার হরিণের চর্ম্ম তাঁহার উত্তরীয়রূপে একটী গ্রন্থি দ্বারা শরীরে সংলগ্ন করা হইয়াছিল এবং উহার স্বাভাবিক শ্যামবর্ণ নীলবর্ণ কণ্ঠের কান্তি সংস্পর্শে আরো নীল হইয়া উঠিয়াছিল॥ ৪৬॥

 তৎকালে তিনি তিন চক্ষে নাসিকার প্রতি লক্ষ্য করিয়া উপবিষ্ট ছিলেন, উহাদিগের ভয়ঙ্করাকৃতি তিন তারা স্থিরভাবে অবস্থিত ছিল এবং বাহির হইতে অল্প অল্প দৃষ্ট হইতেছিল, তৎকালে সেই তিন চক্ষু ভ্রূভঙ্গি রচনা বিষয়ে নিতান্ত পরাঙ্মুখ থাকাতে উহাদিগের লোম-রাজি নিম্পন্দ ভাবে অবস্থিত ছিল॥ ৪৭॥

 তখন শরীরমধ্যবর্ত্তী বায়ুগণকে রোধ করিয়া রাখিয়া ছিলেন, একারণ তাঁহাকে জ্ঞান হইতেছিল, যে বৃষ্টির আড়ম্বর নাই এতাদৃশ একখানি মেঘ, অথবা তরঙ্গ উদয় হয় নাই এরূপ জলনিধি, অথবা বায়ু শূন্য স্থানবর্ত্তী নিশ্চল-শিখাধারী একটী প্রদীপ॥ ৪৮॥

 তাঁহার মস্তকে চন্দ্রকলা বিরাজমান, কিন্তু ললাটস্থিত তাঁহার যে তৃতীয় লোচন, উহার মধ্য দিয়া মস্তকের অভ্যন্তর হইতে সমুত্থিত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম আলোক-রেখা নির্গত হইতেছিল, ঐ আলোকের সংস্পর্শে মৃণালসূত্র অপেক্ষাও সমধিক সুকুমার চন্দ্রজ্যোতি মলিন হইয়া যাইতেছিল॥ ৪৯॥

 তখন তাঁহার মন দেহের নব দ্বারের প্রতি ধাবিত হইতে-