পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
কুরু পাণ্ডব
[৬

সকলেই উপহাস করিবে। সৈরিন্ধ্রী সকলের সমক্ষে আমার সারথ্যের প্রশংসা করিলেন, আমাকেও উপহাসাস্পদ হইতে হইবে; অতএব কৌরবগণের সহিত যুদ্ধ না করিয়া কিরূপে ক্ষান্ত হইব?

 উত্তর কহিলেন―কৌরবগণ আমাদের যথাসর্ব্বস্ব হরণই করুক, লােকে উপহাসই করুক, কিম্বা পিতা তিরস্কারই করুন, আমি কিছুতেই যুদ্ধ করিতে পারিব না।

 এই কথা বলিয়া রাজকুমার ধনুর্ব্বাণ ত্যাগ করিয়া রথ হইতে লক্ষপ্রদানপূর্ব্বক পলায়নে উদ্যত হইলেন।

 অর্জ্জুন তখন বলিলেন—

 হে রাজকুমার! যুদ্ধে পরাঙ্মুখ হওয়া ক্ষত্রিয়ধর্ম্ম নহে। ভীত হইয়া পলায়ন অপেক্ষা সমরে মরণও শ্রেয়স্কর।

 বাক্য বিফল দেখিয়া ধনঞ্জয় রথ হইতে অবতরণপূর্ব্বক উত্তরের পশ্চাতে ধাবমান হইলেন। তাঁহার গতিবেগে সুদীর্ঘ বেণী আলুলায়িত এবং বসন শিথিল ও বিধুয়মান হইতে লাগিল।

 এই অদ্ভুত দৃশ্য অবলােকনে অরস্থিত কুরুসেনাগণ হাস্য করিতে লাগিল। অর্জ্জুনের অঙ্গসৌষ্ঠব কেহ কেহ পরিচিতবৎ বােধ করিয়া এই স্ত্রী-বেশধারী ব্যক্তি কে হইতে পারে ইহা লইয়া নানাপ্রকার বিতর্ক করিতে লাগিল।

 এদিকে অর্জ্জুন শতপদমাত্র গমন করিয়া পলায়মান রাজপুত্রের কেশধারণপূর্ব্বক তাঁহাকে সবলে রথে আরােপিত করিলেন। উত্তর কাতরস্বরে অনুনয় করিলেন―