পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব

একটি রমণীয় ক্রীড়াস্থান নির্ম্মাণ করাইয়া ভ্রাতাদিগকে বলিলেন, “আইস, আমরা উপবনশােভিত গঙ্গাতীরে গিয়া জলক্রীড়া করি।”

 যুধিষ্ঠির প্রমুখ পাণ্ডবগণ ইহাতে সম্মত হইয়া ক্রীড়াস্থলে উপস্থিত হইলেন। কিছুক্ষণ উদ্যানে ভ্রমণের পর তাঁহাদের আহার আরম্ভ হইল। সেই সুযােগে দুষ্টমতি দুর্য্যোধন ভীমসেনের আহার্য্য মিষ্টান্নে গোপনে বিষ মিশাইয়া দিলেন। অবশেষে আহারের পর তাঁহাদের জলক্রীড়া আরম্ভ হইল।

 সূর্য্য যখন অস্ত গেল সকলে জল হইতে উঠিয়া বিশ্রামে মন দিলেন। কিন্তু এদিকে ভীমসেন যে বিবজর্জ্জর অবশ দেহে গঙ্গাতীরেই পড়িয়া আছেন তাই। দুর্য্যোধন ছাড়া আর কাহারে দৃষ্টিগােচর হইল না। ভীমের এই অবস্থা দেখিয়া হৃষ্টচিত্তে সেই দুরাত্মা তাঁহাকে লতাপাশে বদ্ধ করিয়া জলে নিক্ষেপ করিল।

 নদীতলে নাগলােক আছে, সেখানে ভীম যখন উত্তীর্ণ হইলেন তখন নাগরাজ বাসুকি চিনিতে পারিলেন যে ইনি তাঁহারই দৌহিত্র কুন্তীভোজের দৌহিত্র। তখন ভীমকে তিনি বিষের প্রভাব হইতে মুক্ত করিবার জন্য অমৃতপূর্ণ ভাণ্ড হইতে রসপান করাইলেন। ইহাতে শরীরের সমস্ত ক্লেশ অপহৃত হওয়ায় ভীমসেন নগদত্ত দিব্যশষ্যায় শয়ন করিয়া গভীর নিদ্রামগ্ন হইলেন।

 এদিকে কৌরবেরা রাজধানীতে প্রত্যাগমনকালে দুর্য্যোধন ছাড়া আর সকলেই মনে বলেন ভীম তাঁহাদের