পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮]
কুরু পাণ্ডব
১২১

তৎসমস্ত তন্ন তন্ন করিয়া বর্ণনা করিলেন। তখন ধৃতরাষ্ট্র মনের আবেগে আর কাহাকেও বলিবার অবসর না দিয়া স্বয়ং পাণ্ডবপ্রস্তাব সমর্থন করিতে উদ্যত হইলেন। তিনি বলিলেন—

 পাণ্ডবগণ যেরূপ বল সংগ্রহ করিয়াছেন, অর্জ্জুনের যেরূপ দিব্যাস্ত্র-শিক্ষা লাভ হইয়াছে এবং ভীমসেন যেরূপ অলৌকিক বলসম্পন্ন, তাহাতে দুর্য্যোধন উহাদের সহিত কলহ করিয়া অতি অবিবেচকের কার্য্য করিয়াছেন। এ যুদ্ধ ঘটিলে কৌরবকুলের নিস্তার নাই, তাহা আমার স্পষ্টই উপলব্ধি হইতেছে। আমার ইচ্ছ। পাণ্ডবদের ধর্ম্মানুগত প্রস্তাব অনুসারে সন্ধিস্থাপনপূর্ব্বক আমরা চিরকল্যাণ লাভ করি।

 এই কথা শ্রবণে ভীষ্ম-দ্রোণ প্রভৃতি সকলেই ধৃতরাষ্ট্রের উপদেশের প্রশংসা করিয়া তাঁহার প্রস্তাব সমর্থন করিলেন। কিন্তু দুর্য্যোধন এই অপ্রিয় মন্ত্রণা সহ্য করিতে না পারিয়া বলিতে লাগিলেন—  হে পিতঃ! আপনি কেন বৃথা ভীত হইয়া আমাদের নিমিত্ত শােক করিতেছেন? আমাদের শত্রু অপেক্ষা আমরা কিসে হীনবল যে, পরাজয় আশঙ্কায় কাতর হইব? তদ্ব্যতীত এক্ষণে সমগ্র সাম্রাজ্য আমারই হস্তগত এবং এই সকল মহারথ ভূপালবৃন্দ আমারই অনুগত, অতএব পাণ্ডবদের নিস্তার কোথায়?

 ধৃতরাষ্ট্র পুত্রকে নিতান্তই মোহাবিষ্ট দেখিয়া কাতরস্বরে কহিতে লাগিলেন—