পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮]
কুরু পাণ্ডব
১৩১

চিন্তা করিয়াও স্বীয় দোষ দেখিতে পাইতেছ না। কিন্তু বােধ করি উপস্থিত নৃপতিবর্গ অন্যরূপ বিচার করিবেন।

 কৃষ্ণ এইরূপ কহিতেছেন এমন সময়ে দুঃশাসন উত্থানপুর্ব্বক দুর্য্যোধনের নিকট সমাগত হইয়া কহিলেন—

 হে রাজন্! সভাস্থ সকলের মন ক্রমেই তোমার বিপক্ষে আবর্ত্তিত হইতেছে; অতএব তােমার আর এখানে অবস্থান করা শ্রেয় নহে।

 দুর্য্যোধন এই কথায় শঙ্কিত হইয়া অশিষ্টভাবে কর্ণ শকুনি ও দুঃশাসনকে লইয়া সভাগৃহ পরিত্যাগ করিলেন।

 ধৃতরাষ্ট্র ব্যগ্রভাবে বিদুরকে কহিলেন—

 বৎস! দূরদর্শিনী গান্ধারীর সমীপে সত্বর গমনপূর্ব্বক তাঁহাকে এই সভায় আনয়ন কর, যদি মাতার বাক্যে দুর্য্যোধনের সুবুদ্ধির উদয় হয়, একবার শেষচষ্টা দেখা যাক্। হায়! দুর্য্যোধনকৃত এই ঘোর ব্যসন কোথায় প্রশমিত হইবে!

 বিদুর রাজাজ্ঞা পাইবামাত্র নিষ্ক্রান্ত হইয়া অবিলম্বে যশস্বিনী গান্ধারীকে তথায় উপস্থিত করিলেন। তিনি আগত হইলে ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন—

 হে গান্ধারি! তোমার দুর্বিনীত পুত্র দুর্য্যোধন ঐশ্বর্য্যলােভে মুগ্ধ হইয়া গুরুজন-বাক্য অবহেলা করিয়া অতি ভয়ঙ্কর বিপদের সূত্রপাত করিতেছে। এক্ষণে সে সুহৃদ্বাক্য উল্লঙ্ঘনপূর্ব্বক অশিষ্টের ন্যায় সভা ত্যাগ করিয়াছে।

 গান্ধারী কহিলেন—মহারাজ! এই যে ব্যসন সমুপস্থিত,