পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮]
কুরু পাণ্ডব
১৩৫

পরবশ হইয়া আমাকে তাঁহার পত্নী রাধার নিকট পালনার্থে সমর্পণ করিলেন। হে কৃষ্ণ! স্নেহবশত তৎক্ষণাৎ আমার মাতৃরূপিণী রাধার স্তনযুগলে ক্ষীর সঞ্চার হইয়াছিল। তদবধি উভয়ে আমাকে পুত্রনির্বিশেষে লালন করিলেন। যৌবন প্রাপ্ত হইলে আমি সূতজাতীয় কন্যা বিবাহ করিলাম এবং তাঁহা হইতে আমার পুত্র পৌত্রাদি জন্মগ্রহণ করিয়াছে। ইহাদের উপরই আমার সমস্ত প্রণয় আবদ্ধ হইয়াছে, অপরিমেয় ধনরত্ন বা অখণ্ড ভূমণ্ডল প্রাপ্ত হইলেও আমার ইহাদিগকে পরিত্যাগ করিবার অভিলাষ হয় না। তাহা ছাড়া, হে বাসুদেব! আমি এতকাল দুর্য্যোধনের প্রদত্ত রাজ্য অকণ্টকে ভোগ করিয়া আসিয়াছি, আমাকে তিনি সর্ব্বদাই প্রীতি প্রদর্শন করিয়াছেন এবং আমার উপর নির্ভর করিয়াই পাণ্ডবদের সহিত বিরোধে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। অতএব এক্ষণে লোভ বা ভয়ে বিচলিত হইয়া আমি তাঁহার প্রতি মিথ্যাচরণপূর্ব্বক তাঁহাকে নিরাশ করিতে পারিব না। তদ্ব্যতীত, যদি এই যুদ্ধে আমি সব্যসাচীর সম্মুখীন না হই, তবে আমাদের উভয়েরই ভূয়সী অকীর্ত্তি থাকিয়া যাইবে। হে যাদব নন্দন! তুমি আমার হিতার্থে এই সকল প্রস্তাব করিয়াছ, সন্দেহ নাই, কিন্তু আমার অনুরােধ এই যে, তুমি আমার জন্মবৃত্তান্ত পাণ্ডবদের নিকট প্রকাশ না কর। অরিন্দম! ধর্ম্মাত্মা যুধিষ্ঠির আমাকে কুন্তীপুত্র বলিয়া জানিতে পারিলে তৎক্ষণাৎ রাজ্য পরিত্যাগ করিবেন। সে রাজ্য আমি প্রাপ্ত হইলে দুর্য্যোধনকে না প্রদান করিয়া