পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
কুরু পাণ্ডব
[৯

 অনন্তর দুর্য্যোধনের নিয়ােগানুসারে কৌরবপক্ষীয় ভূপতিগণ রাত্রি অবসান না হইতেই স্নানান্তে মাল্য ও শুভ্রবসন পরিধান, শস্ত্র ও ধ্বজ গ্রহণ, স্বস্তিবাচনও অগ্নিতে আহুতি প্রদান করিয়া পরস্পর-শ্রদ্ধান্বিত হইয়া একাগ্রচিত্তে রণক্ষেত্রে গমন করিতে লাগিলেন।

 পঞ্চ-যােজন-বিস্তৃত মণ্ডলাকার যুদ্ধক্ষেত্রের উভয় পার্শ্বে কৌরব ও পাণ্ডব সেনানিবেশ স্থাপিত হইয়াছিল। কৌরব সৈন্যগণ এই ক্ষেত্রের পশ্চিমার্দ্ধ অধিকার করিয়া তথায় সৈন্যসজ্জায় প্রবৃত্ত হইলেন।

 এ দিকে যুধিষ্ঠিরও তাঁহার সেনানায়কগণকে অনুরূপ আদেশ প্রদান করিলে তাহারা বিচিত্র বর্ম্ম কবচাদি ধারণপূর্ব্বক শিল্পী প্রভৃতিকে শিবিরে রাখিয়া সৈন্য ও রথ গজ অশ্বাদি লইয়া ক্ষেত্রের পূর্ব্ববিভাগে চলিলেন, কিন্তু অবশেষে যেরূপ সৈন্য বিভাগ করিবেন, এক্ষণে বিপক্ষদের ভ্রম উৎপাদনের অভিপ্রায়ে অন্যরূপ ক্রমানুসারে চলিতে লাগিলেন। যুদ্ধকালে বিশৃঙ্খলা নিবারণ জন্য রাজা যুধিষ্ঠির পাণ্ডর সৈন্যগণের প্রত্যেক বিভাগের অভিজ্ঞান চিহ্নবিশেষ, ভাষাবিশেষ ও সংজ্ঞাবিশেষ নির্দ্দেশ করিয়া দিলেন।

 পাণ্ডবগণের ধ্বজাগ্র দৃষ্ট হইবামাত্র কৌরবগণ সত্বর ব্যূহিত হইতে আরম্ভ করিলেন। ভীষ্ম প্রথমত সেনাধ্যক্ষদিগকে একত্র করিয়া কহিলেন—

 হে ক্ষত্রিয়গণ! ব্যাধিদ্বারা গৃহে প্রাণ ত্যাগ করা অপেক্ষা যুদ্ধক্ষেত্রে শস্ত্র দ্বারা মৃত্যুই ক্ষত্রিয়ের পক্ষে শ্রেয়।