পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৫৯

পর্ব্বতশ্রেণীর ন্যায় বীরণগণ ব্যূহদ্বার রক্ষা করিতে লাগিল। মধ্যস্থলে ধর্ম্মরাজের শ্বেতচ্ছত্র সর্ব্বোপরি শোভা পাইল, ভথায় তিনি যুদ্ধারম্ভের আদেশ দিবার জন্য স্থিরচিত্তে সূর্য্যোদয় প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।

 এদিকে দুর্য্যোধন সেই অভেদ্য কৌঞ্চাবরণ নামক পাণ্ডবব্যুহ অবলােকন করিয়া দ্রোণাচার্য্যপ্রমুখ সেনানায়কগণকে কহিতে লাগিলেন―

 হে বীরগণ! তােমরা সকলেই শাস্ত্রজ্ঞ ও নানাশাস্ত্রবেত্তা। তােমরা একত্র হইয়া দূরে থাক—তােমরা প্রত্যেকে পাণ্ডব— পরাজয়ে সমর্থ। আমাদের সৈন্যদলও অপর্য্যাপ্ত; অতএব বহুসংখ্যক মহারথ ও সেনা কেবলমাত্র ভীষ্মের রক্ষা কার্য্যে নিযুক্ত করা বিধেয়।

 এইরূপ যুক্তি স্থির হইলে ভীষ্ম তদনুসারে ব্যূহ রচনা করিলেন।

 অনন্তর মহাশঙ্খধ্বনিদ্বারা উভয়পক্ষীয় সেনাধ্যক্ষগণ স্ব স্ব বিভাগকে উত্তেজিত করিলে পুনরায় বীরসমুদায় তুমুল নিনাদে পরস্পরের সহিত অতি ঘাের যুদ্ধে সঙ্ঘটিত হইলেন।

 ক্রমে ভীষ্ম পূর্ব্ববৎ পাণ্ডবসেনা বিদ্রাবিত করিতে আরম্ভ করিলে অর্জ্জুন কৃষ্ণকে কহিলেন—

 হে বাসুদেব! সত্বর পিতামহের সমক্ষে গমন কর। মহাবীর ভীষ্ম দুর্য্যোধনের হিতসাধনে একান্ত তৎপর, উহাকে নিবারণ না করিলে আমাদের সমস্ত সৈন্য বিনষ্ট হইবে, অতএব অদ্য উঁহার সহিত প্রাণপণ যুদ্ধ করিব।