পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
কুরু পাণ্ডব
[১০

করিলে আবার সেনাপতিদ্বয়ের ঘাের যুদ্ধ উপস্থিত হইল। অর্জ্জুন হস্তলাঘব প্রদর্শনপূর্ব্বক পিতামহকে নিবারণ করিয়া বারম্বার তাঁহার শরাসন ছেদন করায় ভীষ্ম অতিশয় প্রীতমনে ধনঞ্জয়কে ভূরি ভূরি সাধুবাদ প্রদান করিলেন। বৃদ্ধ পিতামহের আশ্চর্য্য যুদ্ধকৌশল ও উৎসাহ দর্শনে চমৎকৃত হলেন এবং তাঁহাকে অধিক পীড়ন করিতে ইচ্ছা করিলেন না। কিন্তু ভীষ্ম অর্জ্জুন কর্ত্তৃক নিবারিত হইলে পাণ্ডবপক্ষীয় সেনাধ্যক্ষগণ অবসর পাইয়া শত্রুগণকে অতিশয় ব্যথিত করিলেন। অবশেষে কৌরবগণের অযুত রথ ও সপ্তশত গজ এবং প্রাচাসৌবীর ও ক্ষুদ্রক-দেশীয় যােদ্ধৃগণ সমূলে বিনষ্ট হইলে দুর্য্যোধনের সৈন্যগণ একান্ত হতাশ্বাস হইয়া পড়িল এবং সেনানায়কগণ দুর্য্যোধনের অনুমতিক্রমে অবহারের আদেশ প্রদান করিলেন।

 এইরূপে প্রতিদিন ভীষ্ম পাণ্ডবসৈন্য বিনষ্ট করিতে আরম্ভ করিলেই তিনি অর্জ্জুনকর্ত্তৃক নিবারিত হইতেন অবহারের সময় পাণ্ডববিজয়বার্ত্তায় কৌরবগণ একান্ত হতাশ্বাস হইতেন। দুর্য্যোধন ক্রোধপরিপূর্ণ হৃদয়ে পিমহের প্রতি পক্ষপাতিতার দোষারোপ করিতে কুণ্ঠিত হইতেন না। কিন্তু মহাত্মা গাঙ্গেয় সে সকল অভিযোগ তুচ্ছ জ্ঞান করিয়া সুগভীর বৈরাগ্যভরে স্বীয় কর্ত্তব্য পালন করিয়া চলিতেন।

 অনন্তর অষ্টম দিবসের যুদ্ধ চলিতেছে―এমন সময়ে অর্জ্জুনের অপরা-স্ত্রী নাগকন্যা উলুপীর গর্ভজাত পুত্র ইরাবান্