পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৬
কুরু পাণ্ডব
[১০

 তখন ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ অতিশয় হৃষ্ট হইলেন। কিন্তু অর্জ্জুন স্থানান্তরে শত্রু-নিপাতনে ব্যাপৃত ছিলেন বলিয়া তিনি এ ঘটনার কিছুই জানিতে পারেন নাই। ভীমসেনের পুত্র ঘটোৎকচ ভ্রাতা ইরাবানের মৃত্যু সন্দর্শনে সাতিশয় ব্যথিত হইয়া রাক্ষসবৃন্দ লইয়া একেবারে দুর্য্যোধনকে আক্রমণ করিল। তাহার হস্ত হইতে দুর্য্যোধনকে রক্ষা করিবার নিমিত্ত মহাবীর বঙ্গাধিপতি বহুসংখ্যক গজসৈন্য লইয়া তাঁহাকে বেষ্টন করিলে, অতি ঘােরতর যুদ্ধ চলিতে লাগিল। রাজা দুর্য্যোধন জীবিতাশা পরিত্যাগ করিয়া সেই রাক্ষসবৃন্দের প্রতি নিশিত শরসমূহ নিক্ষেপপূর্ব্বক তাহাদের প্রধান প্রধান অনেককে বিনষ্ট করিলেন। তখন ঘটোৎকচ একান্ত ক্রুদ্ধ হইয়া দুর্য্যোধনের প্রতি এক অনিবার্য্য মহাশক্তি নিক্ষেপ করিলে বঙ্গরাজ দুর্য্যোধনের সমূহ বিপদ দেখিয়া সহসা স্বীয় রথদ্বারা তাঁহাকে আচ্ছাদনপূর্ব্বক নিজগাত্রে সেই শক্তি গ্রহণ করিয়া অকাতরে প্রাণত্যাগ করিলেন।

 সেই সময়ে ভীষ্ম দুর্য্যোধনকে রাক্ষসপরিবৃত দেখিয়া দ্রোণ-সমীপে গমনপূর্ব্বক কহিলেন―

 হে আচার্য্য! ঐ দেখ দুর্য্যোধনের বিভাগে অতি ঘাের রাক্ষসধ্বনি শ্রুত হইতেছে; অতএব এই নিশাচরের হস্ত হইতে উহাকে রক্ষা না করিলে নিস্তার নাই।

 এই বলিয়া বহুসংখ্যক মহারথ-সমভিব্যাহারে ভীষ্ম ও দ্রোণ দুর্য্যোধনের সাহায্যার্থে গমন করিলেন। তথায় দেখিলেন রাক্ষসগণের মায়াযুদ্ধপ্রভাবে শােণিতাক্ত কৌরবগণ