পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
কুরু পাণ্ডব
[১০

ইরাবানের যুদ্ধে আগমন, বিক্রমপ্রদর্শন ও শােচনীয়, মৃত্যুর সংবাদ প্রাপ্ত হইয়া একান্ত শোকাবিষ্ট হইয়া কৃষ্ণকে কহিলেন—

 হে মধুসূদন! এই সমাগত জ্ঞাতি ও বন্ধুবিনাশে আমাদের কি লাভ হইবে? এক্ষণে বিলক্ষণ উপলব্ধি করিতেছি, ধর্ম্মরাজ কি নিমিত্ত পঞ্চগ্রাম মাত্র রাখিয়া বিবাদ ভঞ্জনের চেষ্টা করিয়াছিলেন। ক্ষিত্রিয়বৃত্তিতে ধিক্! যে হেতু অর্থলাভার্ধে দয়িত ব্যক্তির মৃত্যু সম্পাদন করিতে হয়। যাই হোক, এতদূর অগ্রসর হইয়া আর প্রত্যাবর্ত্তনের উপায় নাই, অএব আর বৃথা কালবিলম্বে প্রয়োজন নাই। আমাকে শীঘ্র ভীষণতম যুদ্ধস্থলে লইয়া চল।

 অর্জ্জুনের বাক্যানুসারে দ্রোণাদি-মহারথ-রক্ষিত ভীষ্ম যেখানে নির্দ্দয়রূপে পাণ্ডবসেনা সংহার করিতেছিলেন, বাসুদেব তথায় রথ উপনীত করিলেন। তখন ক্ষুব্ধ ধনঞ্জয়ের সাতিশয় উত্তেজিত যুদ্ধ-প্রকোপে শ্রেষ্ঠ কৌরবগণ নিবারিত ও আত্মরক্ষার্থে ব্যতিব্যস্ত হইলে, পাণ্ডব-সেনাধ্যক্ষগণ অবসর প্রাপ্ত হইয়া যুদ্ধের গতি বিবর্ত্তনপূর্ব্বক কৌরবগণকে অত্যন্ত পীড়ন করিতে আরম্ভ করিলেন।

 ভীমসেন এই সুযোগে ব্যূহ-ভেদ করিয়া ধার্ত্তরাষ্ট্রগণকে প্রাপ্ত হইয়া তাহাদিগকে নির্ম্মমভাবে একে একে যমালয়ে প্রেরণ করিতে লাগিলেন, সে সময়ে কেহই তাহাদিগকে রক্ষা করিতে সমর্থ হয় নাই।

 ক্রমে ভীমার্জ্জুনের ভীষণ যুদ্ধপ্রভাবে শােণিত-লিপ্ত