পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৭৫

পিতা—সেই বৃদ্ধ পিতামহকে কি প্রকারে কঠিন আঘাত করিব, কি প্রকারেই বা সংহার করিব? তিনি আমার সৈন্যসমুদায় বিনাশই করুন, আমার পরাজয় বা মৃত্যুই হউক, আমি তাহা কিছুতেই করিতে পারিব না।

 কৃষ্ণ বলিলেন―হে ধনঞ্জয়! তুমি ভীষ্মকে বধ করিবে বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াছ, ক্ষত্রিয় হইয়া তাহা তোমার লঙঘন করিবার উপায় নাই। তাহা ছাড়া তুমি বিবেচনা করিয়া দেখ, ভীষ্মের এ সময়ে নিশ্চয়ই মৃত্যুকাল উপস্থিত হইয়াছে, নহিলে তিনি তোমাদিগকে এরূপ উপদেশ প্রদান করিতেন না। তােমা-ব্যতীত কেহই তাঁহাকে সংহার করিতে সক্ষম হইবে না; অতএব তুমি সমরস্থলে আপনাকে কালের নিমিত্তস্বরূপ-মাত্র জ্ঞান করিয়া গুরুজন বা দয়িত ব্যক্তি নির্ব্বিচারে সম্মুখীন আততায়ীকে বধ করিবে।

 অর্জ্জুন কহিলেন—হে কৃষ্ণ! যদি নিতান্তই কর্ত্তব্য হয়, তবে শিখণ্ডিই পিতামহের বধসাধন করুন। তাঁহাকে সমক্ষে দেখিলে মহামতি ভীষ্ম অস্ত্র ত্যাগ করিবেন, ভীষ্মের মহারথ রক্ষকগণ হইতে আমি স্বয়ং শিখণ্ডিকে রক্ষা করিব, অতএব এ কার্য্য তাঁহার অনায়াসসাধ্য হইবে।

 বাসুদেব ও পাণ্ডবগণ অর্জ্জুনের এই বাক্যে হৃষ্টচিত্তে সম্মত হইয়া স্ব স্ব বিশ্রাম-গৃহে প্রবেশ করিলেন।

 অনন্তর যুদ্ধের দশম দিবস উপস্থিত হইলে পাণ্ডবগণ ভীষ্মবধে কৃতসংকল্প হইয়া দুর্ভেদ্য ব্যূহ নির্ম্মাণপূর্ব্বক শিখণ্ডিকে তাহার অগ্রে স্থাপন করিলেন। ভীমসেন ও