পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
১৯৩

স্বীয় মেঘসঙ্কাশ হস্তীর উপর হইতে তাঁহার প্রতি অস্ত্রবর্ষণ আরম্ভ করিলেন।

 তখন হস্তী ও রথে ঘােরতর সংগ্রাম আরম্ভ হইল। মহাবাহু ভগদত্ত অনায়াসে অর্জ্জুনের শরনিকর নিরাকৃত করিয়া রথসহ তাঁহাকে ও কৃষ্ণকে বিনাশ করিবার মানসে হস্তী সঞ্চালন করিলেন। মহামতি জনার্দ্দন সেই গজকে কালান্তক যমের ন্যায় আগমন করিতে দেখিয়া অতি সত্বর রথ দক্ষিণপার্শ্বস্থ করিলেন।

 সেই সুযােগে অর্জ্জুন পশ্চাদ্দেশ হইতে হস্তী ও আরােহীকে বিনষ্ট করিতে পারিতেন, কিন্তু ধর্ম্ম স্মরণ করিয়া তাহা করিলেন না। তখন সেই মহাগজ অবিশ্রাম পাণ্ডবসৈন্য সংহার করিতে পাকিলে অর্জ্জুনের ক্রোধের পরিসীমা রহিল না। তিনি সুতীক্ষ্ণ শরদ্বারা হস্তীর বর্ম্ম ছেদন করিলেন এবং ভগদত্ত-নিক্ষিপ্ত অস্ত্রসমুদায় নিবারণ করিয়া তাঁহাকে গাঢ়বিদ্ধ করিলেন। তখন ভগদত্ত ধনঞ্জয়ের মস্তকে এক তােমর নিক্ষেপ করিলে সেই আঘাতে তাঁহার কিরীট বিবর্ত্তিত হইল। পার্থ কিরীট যথাস্থানে সন্নিবেশিত করিয়া রােষভরে ভগদত্তকে কহিলেন—

 হে প্রাগ্‌জ্যোতিষেশ্বর। এই সময়ে সকলকে উত্তমরূপে নিরীক্ষণ করিয়া লও। আমার কিরীট যে বিপর্য্যস্ত করে, তাহার আর রক্ষা নাই।

 এই বাক্যে ভগদত্ত যৎপরােনান্তি ক্রুদ্ধ হইয়া এক অঙ্কুশ নিক্ষেপ করিলেন। অর্জ্জুন তাহা নিবারণ করিতে পারিলেন