পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
কুরু পাণ্ডব
[১১

না দেখিয়া কৃষ্ণ সত্বর তাঁহাকে আচ্ছাদনপূর্বক স্বীয় শরীরে তাহা গ্রহণ করিলেন। ইহাতে মহাবীর ধনঞ্জয় নিতান্ত ক্লিষ্টচিত্তে কৃষ্ণকে কহিলেন―

 হে মধুসূদন! তুমি প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলে যুদ্ধ করিবে না, এক্ষণে তাহা রক্ষা করিলে না। আমি অশক্ত বা ব্যসনাপন্ন হইলে অবশ্য আমাকে রক্ষা করা তোমার কর্ত্তব্য হইত, কিন্তু আমি অস্ত্রধারী ও যুধ্যমান থাকিতে সমরব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা তােমার উচিত হয় নাই।

 এই বলিয়া অর্জ্জুন সহসা হস্তীর কুম্ভান্তরে নারাচ নিক্ষেপ করিলেন। তখন ভগদত্ত বারম্বার হস্তিচালনার চেষ্টা করিলেও কৃতকার্য্য হইলেন না। সেই হস্তী মর্ম্মাহত হইয়া কিয়ৎক্ষণ মধ্যেই স্তব্ধগাত্র ও অবনি-তলগত হইল এবং আর্ত্তস্বরে চীৎকার করিয়া প্রাণত্যাগ করিল। সেই সময়ে ধনঞ্জয় অর্দ্ধচন্দ্রবাণে ভগদত্তের হৃদয় ভেদ করিলে তিনিও ধনুর্ব্বাণ পরিত্যাগপূর্ব্বক পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হইলেন। তখন অর্জ্জুন পুনরায় অনিবারিত গতিতে যুধিষ্ঠিরের নিকট গমন করিতে লাগিলেন।

 ওদিকে অর্জ্জুন স্থানান্তরিত হইলে দ্রোণাচার্য্য অতি দুর্ভেদ্য ব্যূহরচনা করিয়া যুধিষ্ঠিরকে গ্রহণ করিবার মানসে পাণ্ডবসৈন্য-অভিমুখে অগ্রসর হইতে লাগিলেন, তখন যুধিষ্ঠির প্রতিব্যূহ নির্ম্মাণ করিলে দ্রোণ ও তাঁহার রক্ষকগণের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ উপস্থিত হইল। যেমন বায়ুবেগে মেঘমণ্ডল ছিন্নভিন্ন হয়, তদ্রূপ দ্রোণাচার্য্যের গতিরোধক