পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
১৯৫

সৈন্যদল নিতান্ত বিক্ষিপ্ত হইতে লাগিল। সেই সুযােগে মহাবীর দ্রোণ যুধিষ্ঠিরকে প্রাপ্ত হইয়া তাঁহাকে শরনিকরে আচ্ছন্ন করিলেন।

 গজযূথপতিকে মহাসিংহ আক্রমণ করিলে করিগণ যেরূপ আর্ত্তনাদ করে, যুধিষ্ঠিরকে দ্রোণকর্ত্তৃক আক্রান্ত দেখিয়া পাণ্ডবসেনা সেইরূপ কোলাহল আরম্ভ করিল। তখন অর্জ্জুন-নির্দিষ্ট রক্ষক সত্যজিৎ সহসা দ্রোণের প্রতি ধাবমান হইয়া তাঁহার সারথি ও অশ্বকে গাঢ় বিদ্ধ করিয়া মণ্ডলাকারে বিচরণপূর্ব্বক আচার্য্যের ধ্বজচ্ছেদন করিলেন। ইহাতে দ্রোণ ক্রুদ্ধচিত্তে দশ বাণে সত্যজিতের কলেবরবিদ্ধ করিলেও তিনি কিছুমাত্র কম্পিত না হইয়া পুনরায় দ্রোণকে প্রহার করিলেন।

 পাণ্ডবগণ সত্যজিতের এভাদৃশ পরাক্রম দর্শন করিয়া বীরনাদ ও বসনকম্পনে তাঁহার অভিনন্দন করিলেন। দ্রোণাচার্য্য বারম্বার সত্যজিতের শরাসন ছেদন করিতে লাগিলেন, কিন্তু সেই সত্যপরাক্রম বীর ক্রমাগত শরাসন গ্রহণপূর্ব্বক বিচলিত-চিত্তে ঘােরতর সংগ্রাম করিতে লাগিলেন। অবশেষে অবসর পাইকমাত্র আচার্য্য অর্দ্ধচন্দ্রবাণে সত্যজিতের মস্তকচ্ছেদন করিলেন। তখন অর্জ্জুনের উপদেশক্রমে যুধিষ্ঠির জয়শীল আচার্য্যের সম্মুখে অবস্থান না করিয়া যুদ্ধক্ষেত্র হইতে প্রস্থান করিলেন।

 যুধিষ্ঠিরকে প্রাপ্ত না হইয়া দ্রোণ ক্রোধভরে রণক্ষেত্রে বিচরণপূর্ব্বক বহুসংখ্যক পাঞ্চালকে বিনষ্ট করিলেন। ইত্য-