পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
কুরু পাণ্ডব
[১১

বসরে অর্জ্জুন ভগদত্তকে সংহারান্তে পথিমধ্যে অসংখ্য কৌরবসৈন্য বিনষ্ট করিয়া সেই স্থানে উপস্থিত হইলে পাণ্ডবগণ নবোৎসাহ-লাভপূর্ব্বক একান্ত দুর্দ্ধর্ষ হইয়া উঠিলে সেই সময়ে দ্রোণ-সৈন্য ক্ষণমাত্রও তাঁহাদের সমক্ষে অবস্থান করিতে সক্ষম হইল না। দ্রোণাচার্য্য চতুর্দ্দিক্ হইতে আক্রান্ত হইয়া বিফল মনোরথে তথা হইতে প্রস্থান করিলেন। তখন দুর্য্যোধন স্বপক্ষকে নিতান্ত হাস্যাস্পদ হইতে দেখিয়া আচার্য্যের অনুমতিক্রমে অবহারের আদেশ প্রদান করিলেন।

 অনন্তর পরদিন প্রভাতে তাবশিষ্ট ত্রিগর্ত্তগণ পুনরায় অর্জ্জুনকে রণক্ষেত্রের বহির্দ্দেশে আহ্বান করিয়া তাঁহার সহিত ঘোর সমরে ব্যাপৃত হইলেন। সেই সময়ে দ্রোণ তাঁহার বাক্যানুসারে দুর্ভেদ্য ব্যূহ রচনাপূর্ব্বক অপ্রতিহত গতিতে পাণ্ডবগণের প্রতি আগমন করিলেন।

 অনন্তর রাজা যুধিষ্ঠির আচার্য্যকে দুর্দ্দান্তভাবে আগমন করিতে দেখিয়া শঙ্কিতমনে উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। দ্রোণকৃত দুর্ভেদ্য চক্রব্যূহ প্রবেশে আর কাহাকেও সক্ষম না দেখিয়া অবশেষে তিনি অর্জ্জুন-সমতেজা অভিমন্যুর উপর এই দুর্ব্বহভার সমর্পণ করিয়া কহিলেন―

 বৎস! আমরা কিরূপে এই চক্রব্যূহ ভেদ করিব কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। এক্ষণে অর্জ্জুন প্রত্যাগমন করিয়া যাহাতে আমাদিগকে নিন্দা করিতে না পারেন, তুমি সেইরূপ অনুষ্ঠান কর।