পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৮
কুরু পাণ্ডব
[১১

উদ্বিগ্ন -চিত্তে সুবর্ণ-মণ্ডিত পিঙ্গল-বর্ণ অশ্বগণকে দ্রোণ-সৈন্যাভিমুখে চালনা করিল। পাণ্ডব-বীরগণও অভিমন্যুকে অনুসরণ করিতে লাগিলেন। ভাগীরথীর স্রোতের সমুদ্র প্রবেশের ন্যায় দ্রোণ-সৈন্যের সহিত অভিমন্যুর সমাগম অতি তুমুল হইয়া উঠিল। তথাপি তিনি অনায়াসে দ্রোণের সমক্ষেই ব্যূহভেদপুর্ব্বক তন্মধ্যে প্রবেশ করিলেন।

 কিন্তু তাঁহার অনুগমনে প্রবৃত্ত পাণ্ডবগণ জয়দ্রথকর্ত্তৃক ব্যূহ দ্বারেই নিবারিত হইলেন। সমবেত প্রযত্ন সত্ত্বেও তাঁহারা কিছুতেই দৈববলে বলীয়ান সিন্ধুরাজকে অতিক্রম করিতে সমর্থ হইলেন না। সেই সুযোগে কৌরবগণ পুনরায় দৃঢ়-ব্যূহিত হইয়া চতুর্দ্দিক্‌ হইতে অভিমন্যুকে বেষ্টন করিলেন।

 অনন্তর দুর্য্যোধন প্রথমে অর্জ্জুন-তনয়কে প্রহার করিতে আরম্ভ করিলেন, কিন্তু সে মহাবীরের প্রতাপ শীঘ্রই তাঁহার পক্ষে অসহ্য হইয়া উঠিলে দ্রোণাচার্য্য, অশ্বত্থামা, কৃপ, কর্ণ, শল্য ও কৃতবর্ম্মা অভিমন্যুকে নিবারিত করিয়া দুর্য্যোধনকে মুক্ত করিলেন। আস্যদেশ হইতে এইরূপে গ্রাস আচ্ছিন্ন হওয়া অভিমন্যুর সহ্য হইল না; তিনি শরজালে সকলের অশ্ব ও সারথিকে ব্যথিত করিয়া মহারথগণকে পরাঙ্মুখ করিয়া সিংহনাদ করিতে লাগিলেন।

 পরে সন্নিহিত শল্যকে শরনিকরে গাঢ়তর বিদ্ধ করিয়া তাঁহাকে মূর্চ্ছাপন্ন করিলেন। তদ্দর্শনে সৈন্যগণ সিংহ-