পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
কুরু পাণ্ডব

মনের আবেগে একেবারে সংজ্ঞাহীন হইয়া পড়িলেন। কুশলী কৃপাচার্য্য সমূহ বিপদ্‌ বুঝিয়া যুদ্ধনিবারণ-কামনায় কর্ণকে বলিলেন-

 হে বসুসেন! অজ্ঞাতকুলশীল ব্যক্তির সহিত রাজকুমারের ত যুদ্ধ করিবার নিয়ম নাই। তোমাকে সকলে সূতপালিত বলিয়াই জানে, সূতপুত্রের সহিত রাজপুত্র কি প্রকারে যুদ্ধ করিবেন? তবে হে মহাবাহো! তুমি যদি তোমার প্রকৃত পিতামাতার নামোল্লেখপূর্ব্বক কোন রাজ বংশকে তুমি অলঙ্কৃত করিয়াছ তাহা আমাদের নিকট জ্ঞাপন কর, তাহা হইলে পাণ্ডুনন্দন অর্জ্জুন অনায়াসেই তোমার প্রতিযোদ্ধা হইতে পারেন।

 এইরূপে অভিহিত হইলে কর্ণ স্বীয় কুলশীল না জানায় লজ্জায় অধোবদন হইয়? রহিলেন। দুর্য্যোধন স্বীয় শরণাগত বীরের অবমাননা সহ্য করিতে না পারিয়া উত্তর প্রদান করিলেন—

 হে আচার্য্য! আমি ত জানিতাম যে, বীরের সহিত বীরমাত্রই যুদ্ধের অধিকারী। যাহা হউক অর্জ্জুন যদি রাজা ব্যতীত অন্যের সহিত যুদ্ধ না করেন, তবে আমি এইক্ষণেই বসুসেনকে অঙ্গরাজ্যে অভিষিক্ত করিতেছি।

 এই বলিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ সুবর্ণপীঠ আনয়নপূর্ব্বক তদুপরি কর্ণকে উপবিষ্ট করাইয়া, মন্ত্রবিদ্‌ ব্রাহ্মণগণকে আহবানপূর্ব্বক লাজ কুসুম ও সুবর্ণদ্বারা তাঁহাকে যথাবিধি অঙ্গরাজ্যে অভিষিক্ত করলেন।