পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২০১

পাণ্ডবগণ ধৃষ্টদ্যুম্ন বিরাট দ্রুপদ প্রভৃতি মহারথগণ-রক্ষিত হইয়া ও যতবার অভিমন্যুকে রক্ষা করিবার জন্য সেই চক্রব্যূহ প্রবেশের চেষ্টা করিলেন, ততবার একাকী সিন্ধুরাজ জয়দ্রথ, অভিমন্যু-বিদারিত ব্যূহদ্বার অবরুদ্ধ রাখিয়া তাঁহাদিগকে নিবারণ করিলেন। অবশেষে অবসর-প্রাপ্ত কৌরবগণ কর্ত্তৃক সেই চক্রব্যূহ পুনরায় দৃঢ়বদ্ধ হইলে তাহাদের প্রবেশের আশা সম্পূর্ণ তিরােহিত হইল। সুতরাং শেষ পর্য্যন্ত অরক্ষিত অর্জ্জুন-নন্দন একাকী সমুদ্রমধ্যস্থিত মকরের ন্যায় সেই সুমহৎ সৈন্যদলকে বিক্ষোভিত করিতে লাগিলেন।

 ক্রমে তিনি যখন একান্ত দুর্দ্ধর্ষ হইয়া উঠিয়া কর্ণাদি বীরগণকে বারম্বার নিবারণপূর্ব্বক দুর্য্যোধনের পুত্র লক্ষণ, মদ্ররাজনন্দন রুক্মরথ-প্রভৃতি বহুসংখ্যক রাজকুমার ও মহারথ কোশলাধিপতি বৃহদ্বলকে সংহার করিলেন, তখন কৌরবগণ অতিশয় উদ্বিগ্ন হইয়া দ্রোণাচার্য্যের শরণাপন্ন হইলেন।

 কর্ণ কহিলেন—হে ব্রহ্মন্! আপনি অবিলম্বে ইহার উপায় না করিলে অর্জ্জুন-পুত্র আমাদের সকলকেই একে একে সংহার করিবে।

 আচার্য্য প্রীতমনে প্রিয়শিষ্যপুত্রের সমর-পরাক্রম অবলােকন করিতেছিলেন, তিনি কহিলেন―

 হে বীরগণ! তোমরা কি এপর্য্যন্ত অভিমন্যুকে একবারও বিশ্রাম করিতে দেখিয়াছ? অর্জ্জুন-তনয়ের লঘুচারিত্ব অবলোকন কর। কৌরবমহারথগণ যে ক্রোধপরবশ হইয়াও