পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২০৫

 এইরূপ কথােপকথনে কৃষ্ণ ও অর্জ্জুন শিবিরে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন যে, পাণ্ডবগণ নিতান্ত বিমর্ষ ও বিচেতনপ্রায় হইয়া বসিয়া আছেন। দুর্ম্মনায়মান ধনঞ্জয় শিবিরমধ্যে ভ্রাতা ও পুত্রগণের সকলকেই অবলোকন করিলেন। কিন্তু অভিমন্যুকে দেখিতে পাইলেন না। তখন তিনি ব্যাকুলকণ্ঠে কহিলেন—

 হে বীরগণ! তোমাদের সকলেরই মুখ বিবর্ণ দেখিতেছি এবং তোমরা কেহই আমাকে আজি অভিনন্দন করিতেছ না। বৎস অভিমনু কোথায়? সে অদীনাত্মা প্রত্যহ প্রত্যুদ্গমনপূর্ব্বক আমাকে অভ্যর্থনা করে। আজ আমি শত্রু-সংহার করিয়া আগমন করিতেছি; কিন্তু সে কেন হাস্যমুখে আমাকে সম্ভাষণ করিতেছে না? শুনিলাম, আজ আচার্য্য চক্রব্যূহ নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন, তোমরা অভিমন্যুকে তাহার মধ্যে প্রবিষ্ট হইতে দাও নাই ত? এ ব্যূহ সে ভেদ করিতে জানে মাত্র, আমি তাহাকে নিষ্ক্রমণের কৌশল উপদেশ করি নাই।

 অনন্তর সকলকে নিরুত্তর দেখিয়া অর্জ্জুন প্রকৃত ব্যাপার বুঝিতে পারিয়া অসহ্য-শােকে বিলাপ করিতে লাগিলেন―

 হা পুত্র! তােমাকে বার বার নিরীক্ষণ করিয়াও তৃপ্ত হইতাম না, এক্ষণে কাল এই ভাগ্যহীনের নিকট হইতে তােমাকে হরণ করিল। আমার হৃদয় বজ্রসারবৎ কঠিন সন্দেহ নাই, এইজন্যই সে দীর্ঘবাহুর অদর্শনে এখনও ইহা বিদীর্ণ হইতেছে না। এক্ষণে বুঝিলাম কি নিমিত্ত গর্ব্বিত