পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৬
কুরু পাণ্ডব
[১১

ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ সিংহনাদ করিতেছিল। কৃষ্ণ আগমনকালে কৌরবগণের প্রতি যুযুৎসুর এই তিরস্কার-বাক্য শ্রবণ করিয়াছিলেন—

 হে অধার্ম্মিকগণ! তোমরা অর্জ্জুনকে পরাজয় করিতে অসমর্থ হইয়া এক বালকের প্রাণসংহার করিয়া বৃথা আনন্দিত হইতেছ।

 মহাত্মা বাসুদেব ধনঞ্জয়কে পুত্রশোকে নিতান্ত কাতর দেখিয়া তাহার সান্ত্বনার্থে কহিলেন―

 হে ধনঞ্জয়! এরূপ ব্যাকুল হইও না। শূরগণের এই গতিই বাঞ্ছনীয়। অভিমন্যু বীরজনাকাঙ্ক্ষিত দিব্য লোক প্রাপ্ত হইয়াছে সন্দেহ নাই। তোমার ভ্রাতা ও বন্ধুগণ তোমার শোক সন্দর্শনে একান্ত সন্তপ্ত ও অভিভূত হইতেছেন; অতএব তুমি আত্মসংযমপূর্ব্বক তাহাদিগকে আশ্বস্ত কর।

 কিয়ৎক্ষণ এইরূপে অভিমন্যু-বধ-সংক্রান্ত ঘটনাবলী চিন্তা করিতে করিতে ক্রমে তিনি ক্রোধে অধীর হইয়া উঠিলেন। তখন করে কর নিপীড়ন ও উন্মত্তের ন্যায় দৃষ্টিপাতপুর্ব্বক যুধিষ্ঠিরকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন—

 মহারাজ! আমি প্রতিজ্ঞা করিতেছি, কালই জয়দ্রথকে বিনাশ করিব! সে পাপাত্মা আমাদের পূর্ব্ব সদ্ব্যবহার বিস্মৃত হইয়া দুর্য্যোধনের পক্ষ অবলম্বনপূর্ব্বক এই শোচনীয় দুর্ঘটনার হেতুস্বরূপ হইয়াছে; অতএব কালই তাহাকে সংহার করিব।