পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
কুরু পাণ্ডব
[১১

সংহার কর। এ ঘাের রজনী উত্তীর্ণ হইতে পারিলে বীরগণ পরে অর্জ্জুনকে পরাজয় করিবার অবসর পাইবেন। অতএব তাঁহার নিমিত্ত এই অমােঘ শক্তি বৃথা পােষণ না করিয়া উহা এখনই প্রয়ােগ কর।

 মহাবীর কর্ণ সেই ভয়ঙ্কর নিশীথসময়ে স্বীয় পক্ষের আর্ত্তনাদ উপেক্ষা করিতে না পারিয়া অর্জ্জুন-বধ-নিমিত্ত সেই বহুযত্ন-রক্ষিত অমোঘ শক্তি গ্রহণ ও নিক্ষেপ করিবামাত্র উহা ঘটোৎকচের হৃদয় ভেদ করিয়া উর্দ্ধগতি অবলম্বনপুর্ব্বক ইন্দ্রের নিকট প্রত্যাগত হইল। কৌরবগণ নিশাচর-হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইয়া পরমাহ্লাদে সিংহনাদ ও শঙ্খধ্বনি করিলেন। দুর্য্যোধন কর্ণকে যথােচিত পূজাপূর্ব্বক তাঁহাকে স্বীয় রথে আরোপিত করিয়া সৈন্য-মধ্যে প্রবিষ্ট হইলেন।

 কিন্তু পাণ্ডবগণকে ভীম-তনয়ের শোকে অতিশয় কাতর দেখিয়াও কৃষ্ণ তাঁহাদিগকে ব্যথিত করিয়া হর্ষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন। তখন অর্জ্জুন কহিলেন—

 হে বাসুদেব! বৎস ঘটোৎকচের মৃত্যুতে আমরা সকলেই শােকার্ত্ত হইয়াছি, কিন্তু তুমি কি নিমিত্ত অনুপযুক্ত সময়ে আনন্দ করিতেছ?

 কৃষ্ণ কহিলেন―হে অর্জ্জুন! কর্ণ আজি ইন্দ্র দত্ত মহাশক্তি পরিত্যাগ করিয়া আমাদের অতিশয় প্রীতিকর কার্য্যের অনুষ্ঠান করিয়াছেন। কর্ণের নিকট এই মহা অস্ত্র থাকিতে স্বয়ং যমও তাঁহার সমক্ষে বিরাজ করিতে সক্ষম হইতেন না। মহাতেজা কর্ণ যেদিন কবচ ও কুণ্ডলের বিনি-