পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৮
কুরু পাণ্ডব
[১১

 কৌরব-সেনাপতি দ্রোণও সেই বাক্য অনুমোদন করিলে কৌরব ও পাণ্ডব-সৈন্যগণ অর্জ্জুনের ভূয়সী প্রশংসা করিয়া কেহ বাহনের উপর কেহ ক্ষিতিতলে শয়ন করিয়া নিদ্রাসুখ লাভ করিল।

 অনন্তর নয়ন-প্রীতিবর্দ্ধন পাণ্ডুবর্ণ চন্দ্রমা মাহেন্দ্রী দিক্‌ অলঙ্কৃত করিলে ক্রমে ভূমণ্ডল জ্যোতির্ম্ময় হইয়া উঠিল। ঐ আলোকে সৈন্যগণ প্রবোহিত হইয়া রাত্রির শেষভাগে পুনরায় যুদ্ধার্থে প্রস্তুত হইল।

 অনন্তর কোরবসৈন্য দুই ভাগে বিভক্ত হইল। এক ভাগ দ্রোণের এবং অপর ভাগ দুর্য্যোধনের ও কর্ণের অধীনে ঘোরতর সংগ্রাম আরম্ভ করিল। তখন যুধিষ্ঠির কহিলেন—

 হে কেশব! অভিমন্যুবধে জয়দ্রথের অতি অল্প অপরাধ ছিল, কিন্তু তজ্জন্য অর্জ্জুন তাহাকে সংহার করিলেন। আমার মতে যদি কোন বিশেষ শত্রুকে বিনাশ করা আমাদের অবশ্য কর্ত্তব্য হয়, তবে অগ্রে দ্রোণ ও কর্ণকে সংহার করা অর্জ্জুনের কর্ত্তব্য। উহাদের সাহায্যে দুর্য্যোধন আশ্বস্ত হইয়া যুদ্ধকার্য্য চালনা করিতেছেন।

 যুধিষ্ঠির এই বলিয়া দ্রোণকে আক্রমণ করিলে অর্জ্জুন অন্যান্য বীরগণের সহিত তাঁহাকে রক্ষা করিতে লাগিলেন। সর্ব্বাগ্রে দ্রুপদ ও বিরাট দ্রোণের প্রতি ধাবমান হইলেন, কিন্তু দ্রোণ অনায়াসেই তাঁহাদের নিক্ষিপ্ত অস্ত্রসমূহ খণ্ড খণ্ড করিলেন। তখন বিরাট এক তোমার ও দ্রুপদ এক প্রাস নিক্ষেপ করিলে দ্রোণ অতিশয় রুষ্ট হইয়া সেই অস্ত্রদ্বয়