পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৩৩

ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ, চরণচতুষ্টয়ে নারায়ণী-সেনা-পরিবৃত কৃতবর্ম্মা, দাক্ষিণাত্যগণ-বেষ্টিত কৃপাচার্য্য এবং স্ব-স্ব-সৈন্যদল লইয়া মহাবীর ত্রিগর্ত্তরাজ ও মদ্ররাজ শল্য বিরাজ করিতে লাগিলেন।

 নরশ্রেষ্ঠ কর্ণ, এইরূপে যুদ্ধযাত্রা করিলে ধর্ম্মরাজ অর্জ্জুনের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন―

 ভ্রাতঃ ঐ দেখ মহাবীর কর্ণ বীরগণাভিরক্ষিত কৌরবসেনাকে কি প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করিয়াছেন। কিন্তু উহাদের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধারা সকলেই নিহত হইয়াছেন; অতএব তোমার জয়লাভসম্বন্ধে আমি আর সংশয় করি না। তুমি যুদ্ধ করিলে আমার হৃদয় হইতে দ্বাদশবর্ষ সংস্থিত শল্য উদ্ধৃত হয় তুমি এক্ষণে উপযুক্ত প্রতিব্যূহ নির্ম্মাণ কর।

 জ্যেষ্ঠের এই কথা শ্রবণানন্তর অর্জ্জুন অর্দ্ধচন্দ্রাকৃতি ব্যূহ রচনা করিলেন। ব্যূহের বামপার্শ্বে ভীমসেন, দক্ষিণে মহাধনুর্দ্ধর ধৃষ্টদ্যুম্ন, মধ্যে অর্জ্জুন-রক্ষিত ধর্ম্মরাজ এবং পৃষ্ঠদেশে নকুল সহদেব অবস্থান করিতে লাগিলেন।

 তখন হস্তী অশ্ব ও মনুষ্যসঙ্কুল কুরু-পাণ্ডব-সৈন্যদল পরস্পরকে প্রহার করিতে আরম্ভ করিলে প্রধান যোধগণ নানাবিধ অস্ত্রদ্বারা নর-মস্তকচ্ছেদনপূর্ব্বক তদ্দ্বারা পৃথিবী পরিব্যাপ্ত করলেন। ক্রমে মহারথগণ সম্মুখসমরে সঙ্ঘটিত হইলে সে দিবস ক্রমান্বয়ে বহুবিধ দ্বৈরথ-যুদ্ধ চলিতে লাগিল। অবশেষে কর্ণ অতিশয় দুর্দ্ধর্ষ হইয়া উঠিলে কেই তাঁহাকে নিবারণ করিতে সক্ষম হইলেন না। মাতঙ্গগণ