পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫২
কুরু পাণ্ডব
[১১

একে তাঁহাদের সকলকেই যমসদনে প্রেরণ করিলেন এক স্বীয় প্রতিজ্ঞা হইতে মুক্ত হইয়া মহা আনন্দধ্বনি করিতে লাগিলেন।

 তখন অল্পমাত্র অবশিষ্ট কৌরববীরগণ পুনরায় দীনভাবাপন্ন হইলেন। তাঁহাদের অবস্থা দেখিয়া কৃষ্ণ অর্জ্জুনকে কহিতে লাগিলেন—

 হে পার্থ! অসংখ্য জ্ঞাতি-শত্রু নিহত হইয়াছে। আমাদের যােধগণ স্বীয় কার্য্য সমাধানান্তে স্ব-স্ব সৈন্যমধ্যে বিশ্রাম করিতেছেন। দুর্য্যোধন অবশিষ্ট সৈন্যদল ব্যূহিত করিয়া তম্মধ্যে অবস্থানপূর্ব্বক অসহায়ভাবে ইতস্তত দৃষ্টিপাত করিতেছেন, হতাবশিষ্ট কৌরববীরগণ কেহই এসময়ে তাঁহার নিকটে নাই। অতএব যুদ্ধকার্য্য শেষ করিবার এই প্রকৃত অবসর। তুমি এই সুযােগে দুর্য্যোধনকে সংহারপূর্ব্বক চিরপ্রজ্জ্বলিত বৈরানল নির্ব্বাপিত কর।

 তদুত্তরে অর্জ্জুন কহিলেন―

 সখে! ভীমসেন ধৃতরাষ্ট্রের আর সমুদয় পুত্র সংহার করিয়াছেন, অতএব দুর্য্যোধনেরও তাঁহার হস্তেই নিহত হওয়া সঙ্গত। এক্ষণে অনুমান পঁচ শত অশ্ব দুই শত রথ এক শত মাতঙ্গ ও তিনি সহস্র পদাতি তদুপরি অশ্বত্থামা কৃপাচার্য্য ত্রিগর্ত্তরাজ উলূক শকুনি ও কৃতবর্ম্মা এই মাত্র কৌরবসৈন্য অবশিষ্ট দেখিতেছি। কিন্তু আজি কৃতান্তের হস্ত হইতে কাহারও পরিত্রাণ নাই। আমি অদ্যই ধর্ম্মরাজকে শত্রুশূন্য করিব সঙ্কল্প করিয়াছি; অতএব রথচালনা কর।