পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৪
কুরু পাণ্ডব
[১১

যুগপৎ ছেদন করিয়া উচ্চৈঃস্বরে সিংহনাদ করিলেন। অনন্তর আর এক ভল্ল গ্রহণপূর্ব্বক তিনি সেই দুর্ণীতির মূলীভূত মস্তকও নিপাতিত করিলেন।

 কৌরবসৈন্যগণ শকুনিকে নিহত দেখিয়া শঙ্কিতচিত্তে চতুর্দ্দিকে পলায়ন করিতে লাগিল এবং পাণ্ডবপক্ষ হইতে মহা শঙ্খধ্বনি প্রাদুর্ভূত হইল। এই সময়ে ইতস্তত ধাবমান কৗরবসৈন্যের উপর ভীমার্জ্জুন একসঙ্গে নিপতিত হইলে তাহারা আর কোনক্রমেই পরিত্রাণ পাইল না। দুই চারিজন ব্যতীত সেই সাগরােপম ত্রয়ােদশ অক্ষৌহিণীমধ্যে সমরক্ষেত্র আর কেহই উপস্থিত রহিল না।

 ভূপালগণের মধ্যে একমাত্র কুরুরাজ দুর্য্যোধন জীবিত রহিলেন। তিনি এই সময়ে দশ দিক শূন্য দেখিয়া এবং পাণ্ডবগণের হর্ষধ্বনি শুনিয়া প্রস্থান করাই শ্রেয় বিবেচনা করিলেন। তদনুসারে তিনি একমাত্র গদা হস্তে ধারণ করিয়া বিদুরের উপদেশ স্মরণ ও চিন্তা করিতে করিতে পাদচারে পূর্ব্বদিকে গমন করিতে লাগিলেন। এক বিস্তীর্ণ হ্রদের মধ্যে তাঁহার এক জলস্তম্ভ নির্ম্মিত ছিল, তিনি সেই স্থানে লুকাইত থাকিবার অভিপ্রায়ে ধাবিত হইলেন।

 সঞ্জয়ও এই সময়ে কৌরবশূন্য রণক্ষেত্র হইতে প্রস্থান করিতেছিল পথিমধ্যে কুরুরাজের সহিত তাহার সহসা সাক্ষাৎ হইল। তখন দুর্য্যোধন ব্যগ্রতাসহকারে তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বারবার নিরীক্ষণ ও গাত্রস্পর্শপূর্ব্বক কহিলেন―