পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৬১

 তখন রাজা দুর্য্যোধন যুধিষ্ঠিরের তিরস্কার-বাক্য আর সহ্য করিতে না পারিয়া সহসা জলমধ্য হইতে বহির্গত হইয়া কহিলেন—

 হে কুন্তীনন্দন। তােমাদের বন্ধুবান্ধব রথ ও বাহন সমস্তই রহিয়াছে, আমি একে পরিশ্রান্ত, তাহাতে সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্রবিহীন হইয়া কিরূপে তােমাদের সহিত যুদ্ধ করিব? এক ব্যক্তির সহিত অনেকে যুদ্ধ কোনো ক্রমেই ধর্ম্মসঙ্গত হয় না। হে পাণ্ডবগণ! আমি তোমাদের দেখিয়া কিছুমাত্র ভীত হইতেছি না, একে একে তােমাদের সঙ্গে যুদ্ধ হইলে আমি সকলকেই বিনাশ করিতে পারি।

 কুরুরাজের এই বাক্য শ্রবণে যুধিষ্ঠির কহিলেন―

 হে দুর্য্যোধন! তুমি ভাগ্যক্রমে আজি ক্ষত্রিয়ধর্ম্ম স্মরণ করিতেছ; কিন্তু তােমরা যখন বহুসংখ্যক মহারথ একত্র হইয়া বালক অভিমন্যুকে বিনাশ করিয়াছিলে তখন তােমার সে প্রজ্ঞা কোথায় ছিল? বিপৎকালে সকলেই ধর্ম্মচিন্তা করিয়া থাকে, কিন্তু সম্পদের সময় পরলােকের দ্বার রুদ্ধ অবলোকন করে। যাহা হৌক, তুমি এক্ষণে কবচ পরিধান ও অভীষ্ট আয়ুধ গ্রহণপূর্ব্বক আমাদের মধ্যে যে কোনাে অভিলষিত ব্যক্তির সহিত যুদ্ধ কর। আমি সত্য করিয়া কহিতেছি, তুমি আমাদের মধ্যে একজনকে বিনাশ করিতে পারিলেই সমুদয় রাজ্য তােমার হইবে।

 সেই কথায় দুর্য্যোধন অতিশয় হৃষ্টচিতে বর্ম্মধারণ, কেশকলাপ বন্ধন ও গদাগ্রহণপূর্ব্বক কহিলেন―