পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬২
কুরু পাণ্ডব
[১১

 হে ধর্ম্মরাজ! তুমি যখন আমাকে একজনের সহিত যুদ্ধের অনুমতি প্রদান করিলে তখন তােমাদের মধ্যে যাহার ইচ্ছা আমার সঙ্গে গদাযুদ্ধে প্রবৃত্ত হও। গদাযুদ্ধে তোমরা কেহই আমার সমকক্ষ নই। যাহার ইচ্ছা আমার সম্মুখে গদাহস্তে দণ্ডায়মান হইয়া আমার বাক্যের সত্যাসত্যতা পরীক্ষা কর।

 দুর্য্যোধন এইরূপ আস্ফালন করতে আরম্ভ করিলে বাসুদেব ক্রোধাবিষ্ট হইয়া যুধিষ্ঠিরকে কহিলেন—

 মহারাজ! তুমি কোন সাহসে দুর্য্যোধনকে একজনমাত্রের বিনাশদ্বারা রাজ্যলাভের অনুমতি করিলে? ঐ দুরাত্মা যদি তোমাকে বা অর্জ্জুনকে বা নকুল সহদেবকে বরণ করিত, তাহা হইলে তোমাদের কি দুর্দ্দশা হইত? গদাযুদ্ধে বোধ হয় তােমরা কেহই উহার সমকক্ষ নহ। ভীমসেন অধিক বলবান্, কিন্তু দুর্য্যোধনের অভ্যাস অধিক এবং এস্থলে অভ্যসেরই প্রাধান্য। এক্ষণে নিশ্চয়ই বোধ হইতেছে যে পাণ্ডবগণের অদৃষ্টে কখনই রাজ্যলাভ নাই―বিধাতা উহাদিগকে বনবাস বা ভিক্ষাব্রত অবলম্বন করিবার জন্যই সৃষ্টি করিয়াছেন!

 এই কথা শুনিয়া মহাতেজা ভীমসেন ঈষৎ হাস্যসহকারে কহিলেন—

 হে মধুসূদন! তুমি বৃথা বিষাদগ্রস্ত হইও না। আজি আমি নিশ্চয়ই দুর্য্যোধনকে বিনাশ করিয়া বৈরানল নির্ব্বাণ করিব।