পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৬
কুরু পাণ্ডব
[১১

স্পর্শ করিল, তদ্দর্শনে পাণ্ডবপক্ষীয়গণ সিংহনাদ করিতে লাগিলেন।

 ভীমসেনের এই অভিনন্দন কুরুরাজের নিতান্ত অসহ্য হইল। তিনি উত্তেজিত হইয়া শিক্ষানৈপুণ্য প্রদর্শনপূর্ব্বক ভীমকে বারম্বার প্রহার করিতে আরম্ভ করিলেন, তাঁহার বর্ম্ম ক্রমে ছিন্নভিন্ন হইয়া গেল এবং মহাবীর বৃকোদর বহু কষ্টে ধৈর্য্য রক্ষা করিয়া সমরাঙ্গণে অবস্থিত রহিলেন। তখন বাসুদেব অতিশয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হইয়া অর্জ্জুনকে কহিলেন―

 সখে! দুর্য্যোধন যে শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই অতএব ন্যায়যুদ্ধে ভীমসেন কিছুতেই কৃতকার্য্য হইবেন না। শঠ দুর্য্যোধনকে শঠতাপূর্ব্বক বিনাশ করাই কর্ত্তব্য। স্বয়ং দেবরাজও ছলদ্বারা স্বীয় কার্য্য সিদ্ধ করিয়া থাকেন। এক্ষণে ভীমসেন তাঁহার উরু ভঙ্গের প্রতিজ্ঞা পালনপূর্ব্বক দুর্য্যোধনকে নিপাতিত করুন, নহিলে ধর্ম্মরাজ বিষম সঙ্কটে পড়িবেন। তোমার জ্যেষ্ঠ কি নির্ব্বোধ। উনি কি বিবেচনায় একজনের পরাজয়ে রাজ্যদানের প্রতিজ্ঞা করিলেন?

 অর্জ্জুন এই কথা শুনিয়া স্বীয় বামজানুতে আঘাত করিয়া ভীমসেনকে সঙ্কেত করিলেন। তখন বৃকোদর অর্জ্জুনের ইঙ্গিতে স্বীয় প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে প্রবোধিত হইয়া গদা উদ্যত করিয়া বাম মণ্ডল অবলম্বন করিলেন। সুযোগ বুঝিয়া তিনি স্বেচ্ছাক্রমে রন্ধ্র প্রদর্শন করিলে দুর্য্যোধন বঞ্চিত হইয়া তাঁহার প্রতি ধাবমান হইলেন। তখন ভীমসেন সহসা