পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব
৩১

হইয়া সহসা উত্থানপূর্ব্বক পরীক্ষাভূমির দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলেন।

 ইহাতে বিপ্রমণ্ডলীর মধ্যে মহা কোলাহল উপস্থিত হইল। কেহ চীৎকার করিয়া অর্জ্জুনকে উৎসাহ দান করিতে লাগিলেন, কেহ বা বিমনা হইয়া বলিতে লাগিলেন—

 অহো কি আশ্চর্য! সুবিখ্যাত ধনুর্দ্ধারী ক্ষত্রগণ যে বিষয়ে অসমর্থ হইলেন, তাহাতে অকৃতাস্ত্র ব্রাহ্মণকুমার কি প্রকারে কৃতকার্য্য হইবার দুরাশা করিতে পারে। ইহাকে নিবারণ করা যাউক।

 অর্জ্জুনের পক্ষাবলম্বীরা বলিলেন―

 এই যুবার পীনস্কন্ধ দীর্ঘবাহু ও গতির উৎসাহ দেখিয়া আমাদের ভরসা হইতেছে। সকলে সুস্থির হইয়া ইহার কার্য্য অবলোকন কর।

 এই কথায় সকলে শান্ত হইয়া অর্জ্জুনকে মনোযোগসহকারে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন।

 অনন্তর অর্জ্জুন প্রথমে বরপ্রদ মহাদেবকে প্রণাম করিয়া সেই ভীষণ শরাসনকে প্রদক্ষিণ করিলেন; পরে বাল্যবন্ধু কৃষ্ণের সস্নেহ দৃষ্টি আপনার প্রতি আবদ্ধ দেখিয়া প্রীত মনে ও মহা উৎসাহে কার্ম্মুক উত্তোলনপূর্ব্বক ধনুর্ব্বেদপারগ নৃসিংহ সকলের নিষ্ফলপ্রযত্নকে লজ্জা দিয়া তিনি নিমেষমধ্যে তাহাতে জ্যা-রোপণ করিলেন। এবং পাঁচটি বাণ গ্রহণ পূর্ব্বক শরসন্ধান করিয়া ঘূর্ণ্যমাণ যন্ত্রের ছিদ্রের মধ্য দিয়া কষ্টে দৃশ্য লক্ষ্য বিদ্ধ ও ভূতলে পাতিত করিলেন।