পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
কুরু পাণ্ডব
[৪

 যুধিষ্ঠির বলিলেন—জ্যেষ্ঠতাতের যদি সেরূপ আদেশ হইয়া থাকে, তবে অক্ষ ক্ষয়কর জানিয়াও আমি ক্রীড়া হইতে নিবৃত্ত হইব না।

 এইমাত্র বলিয়া যুধিষ্ঠির মোনাবলম্বনপূর্ব্বক ভ্রাতাদের সহিত ক্রীড়াগৃহে প্রবেশ করিলেন।

 শকুনি বলিলেন—মহারাজ! বৃদ্ধ রাজা তােমাদিগকে যাহা কিছু প্রত্যর্পণ করিয়াছেন, তাতে আমরা আর হস্তক্ষেপ করিতে চাহি না; এবার অন্য প্রকার পণ নির্ধারণ করা যাক্। আমাদের বা তােমাদের যে পক্ষেরই পরাজয় হইবে, তাহাদের দ্বাদশ বৎসর বনবাস এবং এক বৎসর অজ্ঞাতবাস করিতে হইবে; অজ্ঞাতবাসকালে জ্ঞাত হইলে পুনরায় দ্বাদশবর্ষের জন্য বনগমন করিতে হইবে;—এই পণে যদি তুমি ভীত না হও, তবে আইস দ্যূতারম্ভ করি।

 সভাস্থ লােকে ইহাতে উদ্বিগ্ন হইয়া ব্যস্তচিত্তে হস্তপ্রসারণপূর্ব্বক কহিতে লাগিলেন—

 হে বান্ধবগণ! তোমাদিগকে ধিক্! যুধিষ্ঠির বােধ হয় এই ভয়ঙ্কর পণের পরিণাম না বিবেচনা করিয়াই দ্যূতে হস্তক্ষেপ করিতেছেন,—কিন্তু ক্রীড়া-ভীরু-অপবাদের লজ্জায় যুধিষ্ঠির আসন্নকালীন মোহাচ্ছন্ন ব্যক্তির ন্যায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হইয়া পণে অঙ্গীকারপুর্ব্বক অক্ষনিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। কিন্তু সিদ্ধহস্ত শকুনি অনায়াসে জয়লাভ করিয়া পাণ্ডবগণকে বনবাস-প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিলেন।

 অনন্তর ধর্মাত্মা পাণ্ডবগণ পূর্ব্ববৎ শান্তভাবে পরাজয়