পাতা:কৃষিতত্ত্ব - নীলকমল লাহিড়ী.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষিতত্ত্ব। SS ধান্যাদি শস্য মর্দন করিবার নিয়ম। এই, প্ৰথমতঃ কৰ্ত্তন করিয়া বাটীতে আনিয়া পুঞ্জ (পুজ) করিয়া রাখিবো। এই পরিমাণে পুঞ্জ করিবে যে এক পুঞ্জের শস্য আঙ্গিনাতে ( প্ৰাঙ্গণে ) ছাড়াইয়া মর্দন করা যাইতে পারে। তৎপরে রীতিমত শুষ্ক হইলে আঙ্গিনাতে ছড়াইয়া চারিটী গোরু রাজুদ্বারা পরস্পর সংযুক্ত করিয়া উহার উপর চালাইবে। যে পৰ্য্যন্ত সমুদয় শস্য গাছ হইতে না পড়ে, তাবৎ ঐ রূপ করিতে হইবে। তদনন্তর হস্ত দ্বারা গাছ সকল ধরিয়া ঝাড়িয়া স্থানান্তরে রাখিবো। তৎপরে শস্য কুলাতে (সূর্পো) লইয়া খাড়া হইয়া আস্তে আস্তে মৃত্তিকাতে ফেলিবে । এই কাৰ্য্য বায়ু বহনের সময়ে করিলে ভাল হয়। ইহাতে ধূলি ও ভগ্ন খণ্ড খণ্ড তৃণ সকল দূরে উড়িয়া যাইবে, ধান্য সকল এক স্থানে পড়িবে, ইহাকে উড়ান বলে । এই কাৰ্য্যের পর কুলা দ্বারা উত্তমরূপে ঝাড়িয়া রৌদ্রে শুকাইয়া রাখিতে হয়। এক বিঘা। ভূমির শস্য কৰ্ত্তন মর্দনাদির নিমিত্ত গো ও মানুষ্যের যে সংখ্যা ও সময় লেখা হইল, প্ৰায় সকল শস্যেই ঐ রূপ প্ৰয়োজন হইবে । যে যে শস্যে সময় ও গোমনুষ্যাদি অল্প কি অধিক লাগিবে, তাহ সেই সেই স্থলে লেখা যাইবে । রাঢ় প্রভৃতি কোন কোন স্থানে মানুষ্যে ধোপার। পাটের মত তক্তার উপর হস্ত দ্বারা মর্দনের কাৰ্য্য সম্পাদন করে । ধোপারা যে প্রকারে কাপড় ধৌত করে, সেই প্রকারে ধান্যের আট ধরিয়া তক্তাতে আঘাত করিয়া ধান্য পৃথক করিয়া লয়। এই প্রকারে ধান্য মর্দন করিলে সেই সকল পলাল দ্বারা গৃহাদি ছাইবার কৰ্ম্ম হইতে পারে। রাজ মাৰ্ত্তণ্ডে লিখিত আছে, “ নিত্যং দশাহলে লক্ষ্মীনিত্যং পঞ্চহালে ধনীং । নিত্যঞ্চ ত্ৰিহলে ভক্তং নিত্যমেকহলে ঋণাং । ” যাহার দশ খান হাল চলে, সে লক্ষ্মীবান হয়, যাহার পাঁচখান হাল চলে, সে ধনী হয়, যাহার তিন খান হাল চলে, তাহার অন্ন কষ্ট হয় না । যাহার এক খান মাত্ৰ হাল চলে, তাহার নিয়তই ঋণ থাকে। এ লেখা বিলক্ষণ যুক্তিসঙ্গত বলিয়া বোধ হয় ।