পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

: ঐ দিবস রাত্রি আটটার সময়ে কৃষ্ণকান্ত রায় আপন শয়নমন্দিরে পর্যাঙ্কে বসিয়, ੈ। করিয়া, সটকায় তামাক টানিতেছিলেন এবং সংসারে একমাত্র ঔষধমাদকমধ্যে শ্রেষ্ঠ—অহিফেন ওরফে আফিমের নেশায় মিঠে রকম বিমাইতেছিলেন। ঝিমাইতে ঝিমাইতে খেয়াল দেখিতেছিলেন, যেন উইলখানি হঠাৎ বিক্রয় কোবাল হইয়া গিয়াছে। যেন হরলাল তিন টাকা তের আন স্থা কড়া ছ ক্রাভি মূল্যে র্তাহার সমুদয় সম্পত্তি কিনিয়া লইয়াছে। আবার যেন কে বলিয়া দিল যে, না, এ দানপত্র নহে, এ তমলুক। তখনই যেন দেখিলেন যে, ব্ৰহ্মার বেটা বিষ্ণু আসিয়া বৃষভারূঢ় মহাদেবের কাছে এক কোঁটা আফিম কর্জ লইয়া, এই দলিল লিখিয়া দিয়া, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড বন্ধক রাখিয়াছেন—মহাদেব গাজার ঝেণকে ফোরক্লোজ করিতে ভুলিয়া গিয়াছেন। এমত সময়ে, রোহিণী ধীরে ধীরে সেই গৃহমধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিল, “ঠাকুরদাদা কি ঘুমাইয়াছ ?” কৃষ্ণকান্ত ঝিমাইতে ঝিমাইতে কহিলেন, “কে, নন্দী ? ঠাকুরকে এই বেলা .ফ1ল:ে 1জ করিতে বল ।” রোহিণী বুঝিল যে, কৃষ্ণকাম্ভের আফিমের আমল হইয়াছে। হাসিয়া বলিল, “ঠাকুরদাদা, নন্দী কে ?” কৃষ্ণকান্ত ঘাড় না তুলিয়া বলিলেন, “হুম, ঠিক বলেছ। বৃন্দাবনে গোয়ালাবাড়ী মাখন খেয়েছে-আজও তার কড়ি দেয় নাই ।” । রোহিণী খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিল । তখন কৃষ্ণকাম্ভের চমক হইল, মাথা তুলিয়া দেখিয়া বলিলেন, “কে ও, অশ্বিনী ভরণী কৃত্তিক রোহিণী ?” - রোহিণী উত্তর করিল, “মৃগশিরা আর্ক্স পুনৰ্ব্বস্তু পুস্তা।” - কৃষ্ণ। অশ্লেষা মঘী পূর্বফল্গুনী । - - রো। ঠাকুরদাদা, আমি কি তোমার কাছে জ্যোতিষ শিখতে এয়েছি ? কৃষ্ণ । তাই ত! তবে কি মনে করিয়া ? আফিঙ্গ চাই না ত ? রো। যে সামগ্রী প্ৰাণ ধর্যে দিতে পারবে না, তার জন্যে কি আমি এসেছি । আমাকে কাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন, তাই এসেছি। - কু। এই এই । তবে আফিঙ্গেরই জন্ত ! ©