পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o i. i t | !, o 3. A. ... * ة/هi ১৬৬৬ সালের ভাদ্র-সংখ্যা পঞ্চপুষ্পে দ্বিজেন্দ্রলাল ভাদুড়ী মহাশয় বিভিন্ন সংস্করণের পুস্তকের পরিবর্তন প্রদর্শন করেন। আমরা পরিশিষ্টে “পাঠভেদে” প্রথম ও চতুর্থ সংস্করণের পাঠভেদ দেখাইয়াছি; ইহা হইতেই ‘কৃষ্ণকান্তের উইলে’র প্রায় সকল প্রকার পরিবর্তনেরই কিছু আন্দাজ পাওয়া যাইবে। বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যান্য উপন্যাসের সহিত তুলনা করিলে কৃষ্ণকান্তের উইলের কতকগুলি বিশেষত্ব লক্ষিত হয়। তন্মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য—র্তাহার বর্ণনাবাহুল্যের অভাব এবং আড়ম্বরহীনতা। আয়োজন এবং উপকরণ খুব অল্প, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কথাগুলি ছাড়া গ্রন্থকার বাহিরের কোনও অলঙ্কার অথবা অতিশয়োক্তির আশ্রয় গ্রহণ করেন নাই। দক্ষ মূৰ্ত্তিকারের মত যে মাটির তাল লইয়। তিনি উপন্যাস রচনা মুরু করিয়াছেন, সমাপ্তিশেষে দেখা যাইতেছে, তাহার এক কণিকাও অবশিষ্ট নাই, অথবা একটি কণিকারও অভাব ঘটে । নাই। এমন অপরূপ শিল্পচাতুৰ্য্য, এমন সংযত ভাবপ্রকাশ, বৈজ্ঞানিক ঘটনাবিন্যাস এবং : মুঠু সামঞ্জস্তবোধ বাংলাসাহিত্যের অন্য কোনও উপন্যাসে দৃষ্ট হয় না। মনে হয়, বঙ্কিম- । চন্দ্রের লিপিচাতুৰ্য্য কৃষ্ণকান্তের উইলে চরমে পৌঁছিয়াছে। * ' . . . . কৃষ্ণকাস্তের উইলে অপর লক্ষণীয় বিষয়, বাংলা দেশের পল্লীগ্রামের মধ্যবিত্ত সমাজের জীবনধারার সহিত র্তাহার ঘনিষ্ঠ পরিচয়। এই পরিচয় পুস্তকের প্রত্যেক পরিচ্ছেদে ছড়াইয়৷ আছে। শুধু জমিদারের কাছারিবাড়ী নয় ; গ্রামের পোস্ট-অফিস, মেয়ে-মজলিস, এমন কি, চাষী ও ভৃত্যদের পরস্পর কথোপকথনের এমন নিখুত ছবি তিনি আঁকিয়াছেন যে, মনে হয়, তিনি আজীবন এইগুলির মধ্যেই বাস করিয়াছেন। আদালত এবং সাক্ষীদের জোবানবন্দীর চিত্রাঙ্কনে তাহার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাইয় হন । মোটের উপর, এমন অল্প পরিসরের মধ্যে সৰ্ব্বজনগ্রাহ ভাষায় তিনি অপুৰ্ব্ব কৌশলে একটি মহাকাব্য রচনা করিয়াছেন। এই প্রসঙ্গ লইয়। অনেকে বিস্তৃত আলোচনা করিয়াছেন; তন্মধ্যে গিরিজাপ্রসন্ন রায়চৌধুরী, পূর্ণচন্দ্র বস্থ, ললিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, অক্ষয়কুমার দত্তগুপ্ত, শশাঙ্কমোহন সেন ও শ্ৰীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সমসাময়িক লেখকদের লেখায় ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ রচনার ইতিহাস সামান্তই পাওয়া যায়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় ১৩২২ সালের বৈশাখ-সংখ্যা নারায়ণে বঙ্কিমচন্দ্র কাটালপাড়ায়’-শীর্ষক প্রবন্ধে 'কৃষ্ণকাস্তের উইলের সহিত বঙ্কিমচন্দ্রের কাটালপাড়া বাস ত্যাগের ইঙ্গিত করিয়াছেন। ইহা হইতে অনুমান করা যাইতে পারে, যাদবচন্দ্রের এই সময়ের কোনও উইলের কথা স্মরণ করিয়া বঙ্কিমচন্দ্র কৃষ্ণকাস্তের উইল রচনা আরম্ভ করিয়া