* উত্তর বড় সহজ মহে। শিশুপালবন্ধের সঙ্গে মহাভারতের স্থল ঘটনাগুলির কোন বিশেষ সম্বন্ধ আছে, এমন কথা বলা যায় না। কিন্তু তা না থাকিলেই যে প্রক্ষিপ্ত বলিতে হুইবে, এমন মহে। ইহা সত্য বটে ষে, ইতিপূৰ্ব্বে অনেক স্থানে শিশুপাল নামে প্রবল পরাক্রান্ত এক জন রাজার কথা দেখিতে পাই । পরভাগে দেখি, তিনি নাই। মধ্যেই তাহীর মৃত্যু হইয়াছিল। পাণ্ডৰ সভায় কৃষ্ণের হস্তে র্তাহার মৃত্যু হইয়াছিল, ইহার বিরোধী কোন কথা পাই না। অনুক্ৰমণিকাধ্যায়ে এবং পৰ্ব্বসংগ্রহাধ্যায়ে শিশুপালবধের কথা আছে। আর রচনাপ্রণালী দেখিলেও শিশুপালবধ-পৰ্ব্বাধ্যায়কে মৌলিক মহাভারতের অংশ বলিয়াই বোধ হয় বটে। মৌলিক মহাভারতের আর কয়টি অংশের স্থায়, নাটকাংশে ইহার বিশেষ উৎকর্ষ আছে। অতএব ইহাকে অমৌলিক বলিয়া একেবারে পরিত্যাগ করতে পারিতেছিল। " - তা না পারি, কিন্তু ইহাও স্পষ্ট বোধ হয় যে, যেমন জরাসন্ধবধ-পৰ্ব্বাধ্যায়ে দুই হাতের কারিগরি দেখিয়াছি, ইহাতেও সেই রকম। বরং জরাসন্ধবধের অপেক্ষ সে বৈচিত্র্য শিশুপালবধে বেশী। অতএব আমি এই সিদ্ধান্ত করিতে বাধ্য যে, শিশুপালবধ স্থূলতঃ মৌলিক বটে, কিন্তু ইহাতে দ্বিতীয় স্তরের কবির বা অন্য পরবর্তী লেখকের অনেক হাত আছে । এক্ষণে শিশুপালবধ বৃত্তান্ত সবিস্তারে বলিব । আজিকার দিনেও আমাদিগের দেশে একটি প্রথা প্রচলিত আছে যে, কোন সম্রাস্ত ব্যক্তির বাড়ীতে সভা হইলে সভাস্থ সৰ্ব্বপ্রধান ব্যক্তিকে স্ৰকৃচন্দন দেওয়া হইয়া থাকে। ইহাকে “মালাচন্দন” বলে । ইহা এখন পাত্রের গুণ দেখিয়া দেওয়া হয় না, বংশমর্য্যাদা দেখিয়া দেওয়া হয়। কুলীনের বাড়ীতে গোষ্ঠীপতিকেই মালাচন্দন দেওয়া হয়। কেন না, কুলীনের কাছে গোষ্ঠীপতি বংশই বড় মান্ত। কৃষ্ণের সময়ে প্রথাটা একটু ভিন্ন প্রকার ছিল । সভ্যস্থ সৰ্ব্বপ্রধান ব্যক্তিকে অর্থ প্রদান করিতে হইত। বংশমর্য্যাদা দেখিয়া দেওয়া হইত না, পাত্রের নিজের গুণ দেখিয়া দেওয়া হইত । যুধিষ্ঠিরের সভায় অর্থ দিতে হইবে—কে ইহার উপযুক্ত পাত্র । ভারতবর্ষীয় সমস্ত রাজগণ সভাস্থ হইয়াছেন, ইহার মধ্যে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ কে ? এই কথা বিচাৰ্য্য। ভীষ্ম বলিলেন, “কৃষ্ণই সর্বশ্রেষ্ঠ । ইহাকে অর্থ প্রদান কর।” প্রথম যখন এই কথা বলেন, তখন ভীষ্ম যে কৃষ্ণকে দেবতা বিবেচনাতেই সর্বশ্রেষ্ঠ স্থির করিয়াছিলেন, এমন ভাব কিছুই প্রকাশ নাই। কৃষ্ণ “তেজঃ বল ও পরাক্রম বিষয়ে 'ఉ4