পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাগপুর অভিভাষণ Sổ-> ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এবং সেনাবাহিনীর চলাচল অসম্ভব হয়েছে বলা চলে। ফ্রান্সের সেরা সেরা কয়েকটি শিল্প-অঞ্চল দখলকারীদের হাতে । ফ্রান্সের প্রাণকেন্দ্ৰ প্যারিসের প্রাণের চাঞ্চল্য থেমে গেছে । অবশিষ্ট ফ্রান্স থেকে ম্যাজিনো লাইনকে বিচ্ছিন্ন করে দেবার জন্য শাপেন অঞ্চলে শক্তিশালী এক জার্মান আক্রমণের তোড়জোড় চলছে । দক্ষিণ-পূর্বে সদ্য-অবতীর্ণ শক্তিশালী ইটালীয় বাহিনী চাপ দিয়ে যাচ্ছে, এবং সর্বত্র হটে আসা ফরাসীবাহিনী সৰ্বতোভাবে শ্রেষ্ঠ জার্মান সেনাবাহিনীর সর্বতোভাবে শ্ৰেষ্ঠ বিমানবলের আক্রমণে নাকালের একশেষ হচ্ছে । ইওরোপে মিত্ৰশক্তির এই নৈরাশ্যজনক অবস্থা । উত্তর মোক থেকে আটলান্টিক পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন রেখায় নাৎসী ঈগল তার পাখা বিস্তার করে রয়েছে । আমাদের যে বলা হচ্ছে। আশান্বিত হবার কোন কারণ নেই, এতে আশ্চৰ্য হবার কিছু নেই। এই সেদিন নাৎসীবাহিনী যখন মুখে “নাখ পারিস” ( “প্যারিস চলো" ) আওয়াজ করতে করতে জার্মান সীমান্ত অতিক্রম করে হল্যাণ্ড ও বেলজিয়ামে অনুপ্ৰবেশ করল, তখন কে ভাবতে পেরেছিল, তারা এত শীঘ্ৰ তাদের লক্ষ্যে উপনীত হতে পারবে ? আমাদের চোখের সামনে সামরিক রণকৌশলের এ যেন এক অলৌকিক ঘটনা । এর সঙ্গে তুলনা চলতে পারে নেপোলিয়নের যুদ্ধাভিযান কিংবা ১৮৭০-এর ফ্রাঙ্কো প্রশিয়ান যুদ্ধে সেডানে বিপৰ্যায়। ফরাসী হাই কমাণ্ড যতই বলুক না কেন, প্যারিসের পতনের পর যান্ত্রিক যানবাহন, অসংখ্য ট্যাঙ্ক ও বোমারু বিমানের সামনে উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ আর সম্ভব নয় । ট্রেঞ্চ থেকে যুদ্ধ করার দিন শেষ হয়ে গেছে । কিন্তু এর পরে কী ? একথা সুস্পষ্ট যে রোনার সরকার গ্রেট ব্রিটেনকে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে জার্মানির সঙ্গে আলাদাভাবে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করবে না। কিন্তু কতদিন তিনি ফরাসী জনসাধারণের আস্থাভাজন হয়ে থাকতে পারবেন? তার কেবিনেটের পতন, জার্মানি ও ইটালীর কাছ থেকে লোভনীয় প্রস্তাব, ঐ প্রস্তাব, মেনে নিয়ে শান্তিচুক্তি করতে প্ৰস্তুত এমন একটি নতুন কেবিনেট