পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SC3 কোন পথে ? দিকই পরীক্ষা করে দেখেছি এবং এর ফলে লাভ-লোকসান কী হৰে তাও ভালোভাবে বিচার করেছি। এ বিষয়ে আমার কোন মোহ নেই এবং আমি সম্পূর্ণ সচেতন, আশু ও প্রত্যক্ষ লাভ কিছুই হবে না, কারণ এইরকম সঙ্কটে সরকারী ও আমলাতান্ত্রিক আচরণ কীরকম হয়ে থাকে। সে সম্পর্কে আমি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। এই মুহুর্তে আমার মানসচোখে ভাসছে টেরেন্স ম্যাকসুহনি ও যতীন দাসের শাশ্বত ও চিরন্তন দৃষ্টান্ত । বিধিব্যবস্থার সে হৃদয় নেই, যা টলানো যেতে পারে, যদিও তার মিথ্যা মৰ্যাদাবোধ আছে এবং সেই মৰ্যাদাবোধকে তা मर्दना श्रेाकgएछु थापक । বর্তমান অবস্থার মধ্যে জীবন ধারণ করা আমার কাছে অসহ্য । অবিচার ও অবৈধতার সঙ্গে আপিস করে নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখা আমার স্বভাবে নেই। এই মূল্য দেওয়ার থেকে বরঞ্চ আমি জীবনই বিসর্জন দেব। পাশবিক বলের সাহায়ে সরকার আমাকে কারারুদ্ধ রাখতে দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ। তার জবাবে আমার বক্তব্য, “আমাকে মুক্তি দাও, নইলে চাই না। আমি বেঁচে থাকতে— এবং আমি বঁচিব না মরব সে-সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার আমারই আছে।” যদিও আশু ও প্ৰত্যক্ষ কোন লাভের সম্ভবনা নেই।-কোন দুঃখবরণ, কোন আত্মত্যাগই কখনও ব্যর্থ হয় না। একমাত্র দুঃখবরণ ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়েই আদর্শের বিকাশ ঘটে এবং তা সার্থক হয়ে ওঠে, এবং সর্বদেশে সৰ্বকালে “শহীদের রক্তেই নিহিত থাকে ভবিষ্যতের দেবালয়”-এই চিরন্তন বিধানেরই জয় হয় । এই মরজগতে সবকিছু লয় পাচ্ছে এবং পাবে-কিন্তু ভাবধারার, আদর্শের ও স্বপ্নের লয় নেই । কোন এক ভাবধারার জন্য একজন ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু সেই ভাবধারা তার মৃত্যুর পরে সহস্ৰ জীবনে মূর্ত হয়ে ওঠে । এইভাবেই অভিব্যক্তির চাকা ঘুরে চলে এবং এক যুগের ভাবধারা, আদর্শ ও স্বপ্ন পরবতী যুগে সঞ্চারিত হয় । এহ জগতে দুঃখবরণ ও আত্মত্যাগের অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে ছাড়া কোন ভাবধারাই সার্থকতা লাভ করেনি ।