পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\OSS কোন পথে ? এখানেও আমি বলিতেছি না। সত্যসত্যই কৃষিবিপ্লব শুরু হইয়া গিয়াছে, এই অর্থে যে কৃষকরা জমিদারদের জমি দখল করিতে, গ্ৰাম হইতে তাহদের বিতাড়িত করিতে, বড় বড় জোতি-জমি নিজেদের অধিকারে আনিয়া নিজেদের মধ্যে তাহ বাটোয়ারা করিতে নিজেরাই উদ্যোগী হইতেছে । এই অবস্থা এখনও দেখা দেয় নাই যেমন দেখা দিয়াছিল চীনে ১৯২৭ সালে । কিন্তু আমি যাহা বিশেষভাবে বলিতে চাই তাহা এই যে ভারতীয় বিপ্লবের পূর্ব-পৰ্যায়ের শেষ অবস্থায় পৌছিয়াছে, এবং এইবার পরবতী পৰ্যায়কে ত্বরান্বিত করিতে আমাদিগকে সুনিশ্চিত ও সুস্পষ্টভাবে প্ৰস্তুত হইতে হইবে । কোন কোন মহলে এখনই সোভিয়েত গঠনের কথা শোনা যাইতেছে । ইহা স্টালিনের কথা অনুযায়ী “হার মানিতে ঝাঁপ দেওয়া” -একটা পুরা পৰ্যায় উল্লম্ফন করা । নিঃসন্দেহে কিষাণসভাগুলির অস্তিত্ব রহিয়াছে এবং সর্বত্র তাহাদিগের অভুত্থান হইবে এবং তাহারা প্ৰধান ভূমিকা গ্ৰহণ করিবে এবং যথার্থ কিষাণ সোভিয়েতগুলির জীবন্ত অগ্রদূত হইবে । ( আমাদের ‘সোভিয়েত' কথাটি ঋণ করিবার প্ৰয়োজন নাই। বৈপ্লবিক ঐতিহ্যমণ্ডিত সহজবোধ্য নাম হিসাবে “কিষাণসভাই’ যথেষ্ট ভাল । ) উপরে যাহা বলা হইল তাহাতে ইহাই বোঝায় যে, আমাদের দৃষ্টি কংগ্রেস হইতে কিষাণসভায় ফিরাইতে হইবে। খুব বেশী-সংখ্যক কিষাণসভা নাই এবং তাহাদের সংগঠন কংগ্রেসের মত অত ব্যাপক নহে, ইহা সত্য হইলেও ইহাতে আমাদের দামিবার কোন কারণ নাই । উপযুক্ত পথনির্দেশ এবং ঠিকমত স্লোগান পাইলে তাহারা ভূইফোড়ের মত সর্বত্র জাগিয়া উঠিবে। কিষাণসভাগুলির উপর আমার গুরুত্ব আরোপ করিবার অর্থ যেন এই করা না হয় যে, আমরা আমাদের অন্যান্য কাৰ্যকলাপ এবং প্রলেতারীয় বিপ্লবের জন্য এ উৎসাহ আমাদের যাহা কর্তব্য তাহা অবহেলা করিব । শ্রমিক’ৰ্শণীর আন্দোলনের প্রতি আমাদের সর্বদা দৃষ্টি রাখিয়া যাইতে হইবে।