পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোন পথে ? ওয়ার্কিং কমিটির বিশিষ্ট সদস্যগণ কর্তৃক মাঝে মাঝে প্রদত্ত এই মর্মে বিবৃতি যে, তারা বিশ্বাস করেন এবং আশা করেন। কংগ্রেসী মন্ত্রীদের পক্ষে শীঘ্রই সরকারী গাদিতে অধিষ্ঠিত হওয়া সম্ভবপর হবে। এইরকম পরিবেশে এবং এইরকম জরুরী অবস্থার মধ্যেও কী প্ৰত্যাশা নিয়ে ছলছল চোখে শূন্য আসনগুলির জন্যে তঁদের এখনও চিন্তাকুল থাকতে হচ্ছে। ভেবে অবাক হতে হয় তঁদের কি জাতীয় আত্মমৰ্যাদা বোধ সম্পূর্ণ লোপ পেয়ে যাচ্ছে। ভারতের যে এককালীন বিপ্লবী, যে প্রাক্তন বামপন্থী নেতা এককালে গুণমুগ্ধ জগতের সামনে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন, কোন অবস্থাতেই তিনি বাম বা দক্ষিণ একমতাবলম্বী কোন কেবিনেটেই আসন গ্ৰহণ করবেন না, এই মর্মান্তিক পরিবেশের মধ্যে তঁার একক অবস্থানের কথা স্মরণ করে বিস্ময় ও বেদনার অবধি থাকে না। বর্তমানে যখন তিনি কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একাত্ম এবং দেশের বামপন্থী আন্দোলনের সম্পূর্ণ বিরোধী—তাঁর এই অবস্থার সঙ্গে ওই গুরুগম্ভীর ঘোষণাকে কী করে মেলানো যায় কে আমাদের তা বলে দেবে ? অতএব অপরের বিরক্তিভাজন হবার বিপদ থাকা সত্ত্বেও আমাদের নির্মমভাবে স্পষ্টবাদী হতে হবে এবং যা উচিত তা খোলাখুলি বলতে হবে । আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এই গুরুতর সময়ে অপরের মুখ রক্ষা করে চললে কোন লাভ হবে না। ওয়ার্কিং কমিটির এই সব প্ৰস্তাব নিছক বাগাড়ম্বর, এদের একমাত্র উদ্দেশ্য দেশের সরল মানুষদের ধোকা দেওয়া ও চোখে ধুলো দেওয়া । এক বছর কিংবা আরও বেশীদিন ধরে মহাত্মা গান্ধী আমাদের নিয়মিত বলে চলেছেন যে, জাতীয় কংগ্রেসের কথা উঠতেই পারে না এবং দেশ তার জন্যে তৈরি নয় -যদিও এ প্রশ্নের মীমাংসা হয় নি, অপ্ৰস্তুত কে, দেশ, না। ওয়ার্কিং কমিটির উজ্জল জ্যোতিষ্করা। মহাত্মা যদি তুরু থেকে সংগ্রামের পক্ষে থাকতেন। আজকের বাম ও দক্ষিণের মধ্যে যে বাদবিবাদ তার অনেকটাই একেবারেই দেখা দিত না । অতএব, গত বারো মাস ধরে তিনি যা কিছু বলে আসছেন এবং সমর্থন করেছেন এত বিলম্বে তিনি