পাতা:ক্রমশ ফসিলের মত একটা শব্দ.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিরর্থক শ্মশানযাত্র। বন্ধু, আমার মৃতদেহটা কাধে তুলে শ্মশানের পথে - চোখের জলের ফোটার ওপর ঘাস ঝরাতে হবে না – আমি তো ইলেকট্রিক চুল্লীর মধ্যে ছাইয়ের শরীর হয়ে আছি । ভোলগার প্রাচীন ভোর থেকে গঙ্গার আধুনিক রাত্রি পর্যন্ত হৃৎপিণ্ডটায় নানান চরিত্রের রক্ত পুরে পুরে পুড়িয়ে ফেলেছি, ফুসফুস দুটোয় সাপুড়ের মতো সাপের নিঃশ্বাস ভ'রে ভু’রে সারা শরীরে অসংখ্য ডোরা ডোরা দাগ বেরিয়েছে – মেরুদণ্ড আর পাজরাগুলো স্থডঙ্গের ক্লীব পথেই ইণটে এখন । চোখদুটোর ওপর নারীর লোভী মাংসেরা বশীর মতে বিধে বিধে আলোটুকু কেড়ে নিয়েছে। লিউকেমিয়া রুগীর ভাড়াটে রক্তকণিকার মতো ভালোবাসার শক্তি হারিয়ে ব্যক্তিত্বহীনতায় ভুগছি। অর্থাৎ, আমি এখন রাম খ্যাম যদ, মধু হ’য়ে ভিড়ে মিশে গেছি – যেন জলের স্রোতের ওপর এক ফোটা চরিত্রহীন জল । তবু কি ভীষণ ভিখিরির মতো একএকটা দিনকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে কাঙালপনা ক’রি । অথচ বুঝতে পারছি না, সন্ন্যাসীর ভিক্ষা পাত্রে আকাঙ্ক্ষার ধুলো কেমন ক’রে পিছলে যায় ? কিংবা জেলের জমাট অন্ধকার সেলের মধ্যেও কি ক’রে স্বেচ্ছায় পূর্বদিকে একটা জানলা ফোটানো যাবে ? - আমি যে মরচে পড়া অভ্যাসের শেকল দিয়ে আত্মাকে গৃহপালিত পশু - ক’রে রেখেছি । . অতএব, নিরর্থক শ্মশানযাত্রার কষ্ট কাধে তুলে নিওনা বন্ধুੀ ছুলেই আমার ছাইয়ের শরীরটা হুবহু মামুলি ছাই হ’য়ে যাবে। >く