ছিল, এটা এই সুনীতির প্রতি অনুকম্পাতেই, নহিলে মাহিনা সে প্রয়োজন মত লইবে বলিয়া নিজেই সুনীতির কাছে জমা রাখিয়াছিল। তথাপি দ্বিধাগ্রস্থভাবে কহিল, “থাকলুম না হয়, কিন্তু বাবু যদি থাকতে না দেয়, দেখেছ তো, মানুষ জনের উপর আজকাল বড্ডই নারাজ। কেবলি বলে, ‘রাক্ষসের মতন গবগবিয়ে সব খাচ্চে,— কোন দিন আমায় খাবে, বিদায় করো, বিদায় করো’।”
“লক্ষ্মী দিদি! তুমি খিড়কী দিয়ে এসে কাজ করে দিয়ে বেরিয়ে যেও, আমায় বাঁচাও, বাবা দেখতে পাবেন না।”
ঝি এ প্রস্তাবে রাজী হইল।
তিন
পরের দিন সকাল বেলায় চন্দ্রকুমার যখন নীচে নামিয়া আসিলেন, তখন তিনি আর সে মানুষই ন’ন। চোরের মতন পা টিপিয়া টিপিয়া ঘরে ঢুকিতেছিলেন, হঠাৎ সামনা-সামনি দেখা হইয়া গেল সুনীতির সঙ্গে। সে তখন ত্রস্তভাবে গরম জলের কেৎলী ঝাড়ন দিয়া ধরিয়া ভিতর দিকের দরজাটা দিয়া ঘরে ঢুকিতেছিল। চন্দ্রকুমার সুস্পষ্টরূপেই চমকাইয়া উঠিলেন, তাঁর ম্লান মুখ ম্লানতর হইয়া উঠিল, সঙ্কোচে দৃষ্টি নত করিয়া দরজার সামনেই দাঁড়াইয়া পড়িলেন, অগ্রসর হইতে আর পা উঠিল না। সুনীতি অতটা লক্ষ্য করে নাই, আর করিলেই বা কি, এরকম ঘটনা তো বৎসর কাটিতে যায়, তাদের নৈমিত্তিক নয়, নিত্যকারই ঘটনা। প্রচণ্ড রাগে জ্ঞানশূন্য হইয়া লোক তাড়ানো এবং তারপর অনুতপ্ত হইয়া মেয়ের কাছে মার্জ্জনা ভিক্ষা, এমন কি, সেই বিতাড়িত যদি তখন সম্মুখে থাকে, তাদের কাছেও হাতে ধরিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করিতে কিছুমাত্র তাঁর বাধে না, আবার বিন নোটিশেই অকস্মাৎ মার মার শব্দে পূর্ব্বকৃত