খোলা দালান উঠোন পার হতে হতে ভিজে বেড়ালেরও অধম হয়ে যাব যে। নিরুপায়ে বিপন্নভাবে প্রশ্ন করলেম, “কে?”
যে এসেছিল দরজায় হুড়কো লাগিয়ে দিতে দিতে উত্তর করলে, “আপনার ঘরে টর্চ্চ আছে?”
ঠিক কথা, টর্চ্চ একটা আছে, কিন্তু কোথায় আছে? টেবিলের উপর, না ওর ড্রয়ারটার মধ্যে? আছে, না আমার বিশ্বাসী চাকরটার শ্যেন দৃষ্টিতে পড়ে যেমন অনেক কিছুই উধাও হয়ে যায়, তাই গেছে, তাও তো জানিনে। বললেম, “থাকলেও থাকতে পারে, তবে খুঁজে বার করি কি করে? আপনি কে? এমন করে এসেই বা ঢুকলেন কেন?”
বাইরের ঘনঘোর দুর্য্যোগের নিকষ কালিমায় নিরালোক গৃহের অন্ধকার নিরন্ধ্র ও জমাট বেঁধে গেছলো, এতটুকু অস্পষ্ট আলোর রেখা কোথাও দিয়ে চোখে পড়ে না, সেই কঠিন পাথরের গুহার মত অন্ধকার কক্ষে একটা অদ্ভুত হাসির শব্দ একটিবারের জন্য হা হা করে বেজে উঠলল, অপরিচিত কণ্ঠের স্বর পরক্ষণে ভেসে এলো— “পিরামিড বিষ হেমলকের যে প্রতিষেধক নিয়ে আপনি এক্সপেরিমেণ্ট করছেন, এ-ঘরে নিশ্চয়ই তা আছে? আমায় শীগ্গির দিন, শীগ্গির।”
অনুজ্ঞাব্যঞ্জক সুদৃঢ় কণ্ঠস্বর।
গভীর বিস্ময়ে প্রায় অভিভূত হয়ে পড়ে বলে উঠলেম, “পিরামিড বিষ! কে বললে এ-কথা আপনাকে?”
আবার সেই হাসিই উত্তর দিল, “কে বললে, সে কাহিনী বলতে গেলে বলা হয়ত শেষ হলেও হ’তে পারে, কিন্তু আপনার প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিমেণ্টের এই সুবর্ণ সুযোগ হঠাৎ আর পাবেন না স্যার। রিসার্চারের ভাগ্যে এতবড় সুযোগ কদাচিৎ মেলে, তাই নয় কি? অস্বীকার করতে পারেন কি এ-কথা?”