পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চমিথুনের মিলন-সেতু
৭৮

 সীমাহারা বিস্ময়ের সঙ্গে সমান ওজনের আতঙ্ক মিশ্রিত হলো। মুখ থেকে বেরিয়ে এলো—“সে কি, ওই দুষ্প্রাপ্য মিশরীয় সর্পবিষ আপনি খেয়েছেন নাকি? পেলেন কোথায়? ওর নাম হেমলক তাই বা জানলেন কি করে? এতো একজন মৃত ব্যক্তির মনগড়া কাল্পনিক উপাধি।”

 আবারও সেই উচ্চ হাস্য—এবার তার ধ্বনি তীক্ষ্ণ এবং তীব্রতর, —“ফের ঐ রকম অবৈজ্ঞানিক কৌতূহল! আপনি জানেন ঐ বিষক্রিয়ার মেয়াদ মাত্র আধঘণ্টা। আমার শরীরে এক কোয়ার্টার আন্দাজ পূর্ব্বে বিষ ঢুকেছে, আগুন জ্বলছে,—“দেহযন্ত্র পুড়িয়ে দিতে মাত্র পনের মিনিট সময় আর বাকি। যদি ওষুধ না পাই শুধু মরবো না, আপনাকে এই রিভলবারের গুলিতে শেষ করে দিয়ে তবেই আপনার অনুসরণ করবো।”

 টর্চ্চের তীব্র আলো জ্বলিয়া উঠিল, সর্ব্বাঙ্গে জলঝরা সুদীর্ঘাকৃতি চড়চড়ে ফর্সা রংএর সুপরিচ্ছদধারী যুবক, বাঁ হাতে তার রিভলবার, —একান্তই নাটকীয় দৃশ্য।

 আমার টর্চ্চটাও সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যক্রমে চুরি যায়নি, টেবিলের উপরেই ছিল, ওষুধটা তো সর্ব্বদা হাতের কাছেই রাখি, ঐ অধুনাবিস্মৃত মিশরীয় বিষের একান্ত দুষ্প্রাপ্য প্রতিষেধকটি মিশর ভ্রমণে গিয়ে নেহাৎই দৈব কৃপায় সেখ সাদুল্লার অযাচিত কৃপায় অবিশ্বাস্যভাবে লাভ করে পর্য্যন্ত তাই নিয়েই তো আমি এই গবেষণা করে যাচ্ছি এবং সেই তীব্র বিষের সঙ্গে পটাসিয়াম সায়নাইডের একটা মিল খুঁজে পেয়ে তারই উপর আমার এই প্রাণান্তপণের অনুসন্ধান তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছি। হার্টের উপর অত্যন্ত জোরে এসে যে কোন মহা-গরল অতি তীব্র আঘাত হেনে থাকে সেগুলি সমশ্রেণীর—এই নীতি ধরে কাজ করে চলেছি। ঐ বিষটির নাম নাকি হেমলক। এই